গুয়াহাটি: গত ৪৮-ঘণ্টায় প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্য। ইতিমধ্যেই, ত্রিপুরা ও মণিপুরে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। অসমে রেল পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।


ইতিমধ্যেই, বন্যা-বিধ্বস্ত অঞ্চলগুলি থেকে মানুষদের উদ্ধার করতে সেনা ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সহায়তা চেয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছে ত্রিপুরা সরকার। গতকালই, উনাকোটি জেলার কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।


https://twitter.com/ANI/status/1006973581392146432

ত্রিপুরার এক শীর্ষ সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, পরিদর্শন থেকে ফিরে এদিন সকালে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে কথা বলেন। জানা গিয়েছে, রাজনাথকে রাজ্যের বন্যা-ভয়াবহ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করেন মুখ্যমন্ত্রী।


ওই আধিকারিকের দাবি, বন্যা-পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র। তিনি যোগ করেন, উদ্ধারকার্যে স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে রাজ্যবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিল্পব দেব।


https://twitter.com/BjpBiplab/status/1007147689656504321

রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর এক কর্তা জানান, খরস্রোতা নদীর কবলে পড়ে গতকাল দুটি গ্রাম সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। প্রায় ১৪ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। গত ৪৮-ঘণ্টায় লাগাতার বৃষ্টির ফলে বহু এলাকা জলমগ্ন।


https://twitter.com/BjpBiplab/status/1006899462663331842

খোয়াই জেলায় বন্যার জলে ভেসে গিয়েছেন এক কৃষক। অন্যদিকে, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় মানু নদীর তীর থেকে আরেক কৃষকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই, হড়পা বানে মৃতদের নিকটাত্মীয়কে এককালীন ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ত্রিপুরা প্রশাসন।


https://twitter.com/CmoTripura/status/1006928491919466496

পাশের রাজ্য মণিপুরেও বন্যার ফলে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। ইম্ফল ও পার্শ্ববর্তী জেলার সবকটি সরকারি দফতর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুক্রবার পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে মণিপুর প্রশাসন। বন্যা-দুর্গতদের আশ্রয় দিতে আপৎকালীন ভিত্তিতে ১৫টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। সেখানে খাবার ও জল সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে অসম রাইফেল্স।


নদীপাড়গুলির মেরামতের কাজ নিজে খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেণ সিংহ। গতকাল নদীর জন ফুলেফেঁপে উঠে ২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। ধসের ফলে বহু জায়গায় রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেক জায়গায় বন্যার জলে রাস্তাই ভেসে গিয়েছে। ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বিকল্প পথ তৈরি করতে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।


অসমে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের পরিষেবা অনেকটাই ব্যাহত হয়েছে। বিশেষ করে, দিমা হাসাও জেলায় পাঁচটি জায়গায় ধস নামায় লুমডিং-বদরপুর শাখায় ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। ইতিমধ্যেই, জোরকদমে রেললাইন সারাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে।


উত্তর-পূর্বের আরেক রাজ্য মিজোরামের বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বর্ষণ হয়েছে। রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্তে লুংলেই, লাবংতলাই এবং সিয়াহা জেলাগুলি কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ সীমান্ত লাহোয়া লুংলেইতে গত ২ দিনের বৃষ্টিপাতের ফলে ৬০টি বাড়ি ডুবে গিয়েছে। গতরাতে, প্রবল বৃষ্টির ফলে, দক্ষিণ মিজোরামের ২টি মূল রাস্তা বন্ধ।