নয়াদিল্লি: ২ সেপ্টেম্বরের ধর্মঘটের ডাক দেওয়া ট্রেড ইউনিয়নগুলি যাতে পিছু হটে, সেজন্য তাদের কিছু দাবি কেন্দ্র মেনে নিলেও অনড় ধর্মঘটীরা। তারা ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে অনড়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, খেতখামারের কাজের বাইরে থাকা আধা-দক্ষ কর্মীদের ন্যূনতম মজুরি দিনে ২৪৬ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫০ টাকা হচ্ছে। কোনও রাজ্য সরকার চাইলে এর চেয়ে বেশি দিতে পারে, তবে কিছুতেই কম দেওয়া চলবে না। কেন্দ্রীয় স্তরে ন্যূনতম বেসিক মজুরি সংশোধনের জন্য শ্রমমন্ত্রীর আওতাধীন ন্যূনতম মজুরি উপদেষ্টা বোর্ডের আলোচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া থাকা বোনাস সংক্রান্ত মামলাগুলি মিটিয়ে ফেলতে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ করবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। জেটলি এও জানান, কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ বছরের বোনাসও সংশোধিত বিধি অনুসারে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে বোনাস সংশোধনী আইন কঠোর ভাবে মানা হবে। বোনাস মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের ফলে বছরে ১৯২০ কোটি টাকার দায় নিতে হবে সরকারকে। বৈঠকে কেন্দ্রীয় কয়লা ও বিদ্যুত্ মন্ত্রী পীযূষ গয়াল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী বঙ্গারু দত্তাত্রেয়ও ছিলেন। জেটলি জানান, কন্ট্রাক্টে থাকা মজুর ও তাদের নিয়োগকারী এজেন্সির নাম নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক হচ্ছে। রাজ্যগুলিকেও এটা মানতে বলা হচ্ছে। নিয়ম না মানা কন্ট্রাক্টরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অঙ্গনওয়াড়ি, মিড ডে মেল, আশা ভলান্টিয়ার্সের মতো অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষামূলক সুবিধাগুলি দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট কমিটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিপোর্ট পেশ করবে বলেও জানান জেটলি। কিন্তু জেটলির ৪২ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা ‘একেবারেই অপ্রতুল’ আখ্যা দিয়ে এআইটিইউসি সাধারণ সম্পাদক গুরুদাস দাশুগুপ্ত জানিয়ে দেন, ধর্মঘটের ডাক বহাল থাকছে। বলেন, আমরা দাবি করছি, সরকার সারা দেশের জন্য ন্যূনতম মজুরি বেঁধে দিতে আইন চালু করুক। আরেক ট্রেড ইউনিয়ন নেতা অশোক সিংহও বলেন, ১২ দফা দাবি সনদের একটিও মানা হয়নি। শ্রমিক, কর্মচারীদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে নামা ছাড়া কোনও রাস্তা নেই। যদিও আরএসএস-ঘনিষ্ঠ ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ সরকারের ঘোষণায় খুশি। তারা শুক্রবারের ধর্মঘটে সামিল হচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, দৈনিক মজুরি ৩৫০ টাকা হিসাবে একজন দিনমজুরের মাসিক আয় দাঁড়াচ্ছে ৯১০০ টাকা (২৬দিন),যা ইউনিয়নগুলির দাবির (মাসে ১৮ হাজার টাকা) চেয়ে অনেক কম। গোড়ায় তারা সব দিনমজুরের ন্যূনমত মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকা করার দাবি করেছিল। তবে সরকার সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে নেওয়ার পর তারাও অঙ্ক বাড়িয়ে দেয়। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকেই ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি সহ ১২টি দাবি নিয়ে সরব হয়। ট্রেড ইউনিয়নগুলি সরকার পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষতি হতে পারে, এই আশঙ্কায় বিমা, প্রতিরক্ষা সহ নানা ক্ষেত্রে সরকারের সাম্প্রতিক প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের নিয়মবিধি শিথিল করার সিদ্ধান্তেও প্রবল আপত্তি জানায় তারা।