মুম্বই: মুম্বইয়ে মমতা-উদ্ধব বৈঠক। গিয়েছিলেন শিল্পপতিদের সংগঠনের সম্মেলনে। তার মাঝে আরব সাগরের তীরে নয়া রাজনৈতিক সমীকরণের জল্পনা উস্কে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার মেরিন ড্রাইভের ধারে হোটেলে প্রায় দেড় ঘণ্টা তিনি বৈঠক করেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে।


সেই শিবসেনা, যাঁরা মহারাষ্ট্রে এবং দিল্লিতে বিজেপির সঙ্গে সরকারে থাকলেও, বিজেপিকে তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে নেমেছে। বিজেপি যেখানে বিরোধীদের দুর্নীতিগ্রস্ত বলে দাবি করে, সেখানে তারই শরিক শিবসেনার কথায়, বিজেপি ‘দুর্নীতিগ্রস্ত দল’। আর শুধু মুখে বলাই নয়, ৫৬ পাতার বুকলেট ইস্যু করে মহারাষ্ট্র বিজেপির বিধায়ক-মন্ত্রীদের নাম, ছবি ছাপিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একের পর এক অভিযোগ এনেছে শিবসেনা। গোটা মুম্বইয়ে ছড়িয়ে দেওয়া শিবসেনার এই বুকলেটের শীর্ষক হল ‘ঘোটালেবাজ ভাজপা’, অর্থাৎ দুর্নীতিপরায়ণ বিজেপি। সেখানে রয়েছে বিজেপি নেতা একনাথ খাডসের নাম, যাঁর বিরুদ্ধে জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগ করেছে শিবসেনা। রয়েছে মহারাষ্ট্রের শিক্ষামন্ত্রী বিনোদ তাওড়ের নাম। বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রের খাদ্যমন্ত্রী গিরিশ বাপটের বিরুদ্ধে ডাল কেলেঙ্কারির অভিযোগ করেছে শিবসেনা। এভাবেই মহারাষ্ট্রের বিজেপি বিধায়ক দিলীপ গাঁধী, বিষ্ণু সাবরা, প্রবীণ দেরকর, রণজিৎ পাতিল, সম্ভাজি পাতিল, জয়কুমার রাবলের মতো হেভিওয়েট বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের নামে নানা কেলেঙ্কারির অভিযোগ করেছে তাঁদেরই শরিক শিবসেনা।

বিজেপি এই প্রতিটি অভিযোগই উড়িয়ে দিলেও, নিজের শরিকের এহেন আক্রমণ যে তাদের যথেষ্ট বিব্রত করেছে, তা বিজেপির প্রতিক্রিয়া থেকেই স্পষ্ট। তাদের বক্তব্য, সরকারের থাকব, আবার বিরোধী আসনেও বসব, এটা শিবসেনার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আর বিজেপি-শিবসেনার এই তিক্ত সম্পর্কের আবহেই নোটবাতিল-জিএসটি নিয়ে মমতার মতোই সরব উদ্ধব। শরিক হয়েও মোদি সরকারের নীতির সমালোচনা করায় শিবসেনার পাশে মমতা। এদিন উদ্ধবের সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে আদিত্য ঠাকরেও। ঘরের দরজা থেকে তাঁদের ভিতরে নিয়ে যান মমতা। প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক চলে। তবে এই বৈঠক বিজেপি বিরোধী মঞ্চের পথে একটা সিঁড়ি হবে কি না, তার উত্তর ভবিষ্যতেই মিলবে।