নয়াদিল্লি: মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রপুঞ্জ জঙ্গি বলছে। কিন্তু তার ওপর যখন নিষেধাজ্ঞা বসানোর কথা উঠছে, তখন সিদ্ধান্ত নিতে গড়িমসি করছে তারা। জৈশ ই মহম্মদ পান্ডা মাসুদ আজহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা বসানোর ইস্যুতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে এভাবেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি।

গতবারের মত এবারও চিনের ভেটোয় মাসুদের ওপর নিষেধাজ্ঞা বসানো যায়নি। মুখে সন্ত্রাসবাদের মুণ্ডপাত করলেও কার্যক্ষেত্রে বারবার বেজিং এই কুখ্যাত জঙ্গির ত্রাণকর্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিনের নাম না করে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন বলেন, ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের কাজ বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা। কিন্তু ভারতের প্রয়োজনে বারবার নানাভাবে তারা মুখ বন্ধ করে রেখেছে। মূল সমস্যা থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখার নীতি নিয়েছে তারা। তাঁর কথায়, যাকে বা যে সংগঠনকে জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাকে বা তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা বসানো যাবে কিনা, তা নিয়ে ৬ মাস ধরে বিচার করে চলেছে নিরাপত্তা পরিষদ। তারপর সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে আবার ৩ মাস সময় নিচ্ছে বিচার বিবেচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য। ফলে ১জনকে ৯মাস ধরে জানার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে যে পরিষদ সদস্যরা একটা মাত্র বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে কিনা।

এ বছর ৩১ মার্চ চিনের ভেটো প্রয়োগে জৈশ পান্ডা আজহারের ওপর নিরাপত্তা পরিষদ নিষেধাজ্ঞা বসাতে পারেনি। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১৪জন ভারতের দাবিতে সহমত হলেও স্রেফ চিনের বাধায় আজহারের সম্পত্তি ফ্রিজ করা যায়নি, চালু করা যায়নি তার ঘোরাফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা।

সেই চিনা নিষেধাজ্ঞা সোমবার শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। চিন যদি নতুন করে আপত্তি না তুলত, তবে স্বাভাবিকভাবেই আজহারের ওপর বহাল হত নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু গত শনিবার বেজিং জানিয়ে দেয়, তারা ওই আপত্তি চালু রাখছে। ফলে এবারেও আজহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা বসানো গেল না।

স্রেফ পাকিস্তানের পাশে থাকার জন্য চিনের এই অবস্থানকে নাম না করে কড়া সমালোচনা করেছে দিল্লি। আকবরউদ্দিন পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদ এখন রাজনৈতিক পক্ষাঘাতের শিকার। এখনই এর সর্বাঙ্গীণ পুনর্গঠন চাই।

২০০১-এই জঙ্গি কার্যকলাপ ও আল কায়দার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য জৈশ ই মহম্মদকে জঙ্গি তালিকাভুক্ত করে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। কিন্তু ওই দলের যে মূল পান্ডা, যার অর্থ ও মগজধোলাইয়ে জৈশ চলছে, তাকে বারবার ছাড় দিয়ে আসছে তারা।