নয়াদিল্লি: উন্নাও গণধর্ষণকাণ্ডে বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের ধর্ষণে ভূমিকা নিশ্চিত করেছে সিবিআই, এই সংক্রান্ত খবর অস্বীকার করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।  শুক্রবার এক বিবৃতি জারি করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে দাবি করা হয়, তারা সেঙ্গারের বিরুদ্ধে এই ধর্ষণকাণ্ডে জড়িত থাকার কোনও খবর এখনও নিশ্চিত করেনি। পুরোটাই তদন্তসাপেক্ষ এবং এখনও এই মামলার তদন্ত চলছে। সিবিআইয়ের দাবি, এই সংক্রান্ত যা খবর সম্প্রতি সামনে এসেছে, পুরোটাই সংবাদমাধ্যমের জল্পনা মাত্র।


প্রসঙ্গত, একটি ইংরেজি দৈনিকে সিবিআইয়ের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এই ধর্ষণকাণ্ডে বিজেপি বিধায়কের জড়িত থাকার দাবি নিশ্চিত করছে। এরপরই সিবিআই জানায়, তারা এই মামলায় এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছয়নি।

উন্নাও গণধর্ষণকাণ্ডের খবর প্রকাশ্যে আসার পর দেশজুড়ে তোলপাড় হয়ে  গিয়েছিল। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের গ্রেফতারি নিয়ে প্রথমে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে গরিমসির অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় আদালত হস্তক্ষেপ করে। পরে মামলাটি সিবিআই গ্রহণ করে। সেই ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক সেঙ্গারের জড়িত থাকার দাবি প্রথমে নিশ্চিত করলেও পরে বয়ান বদল করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

প্রসঙ্গত, এই মামলায় নির্যাতিতা দাবি করেন, সেঙ্গার তাঁকে বাড়িতে ডেকে গতবছর ৪ জুন ধর্ষণ করে। সেসময় বিধায়কের মহিলা সঙ্গী শশী সিংহ বাইরে পাহারায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।

এমনকি প্রথমে ঘটনার তদন্তে থাকা উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ভূমিকায় নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে সিবিআই। প্রসঙ্গত, পুলিশ এফআইআর-এ সেঙ্গার সহ অন্যান্য অভিযুক্তদের নাম উল্লেখই করেনি। অথচ নির্যাতিতা প্রথম থেকেই বিজেপি বিধায়ক সহ অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তার ওপরে  গণধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন। তবে আপাতত এই মামলা নিয়ে কোনওরকমের মন্তব্য করবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

২০১৭ সালে ৪ জুন চাকরি দেওয়ার নাম করে মেয়েটিকে নিজের বাড়িতে ডেকে আনেন অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক। সেদিনই তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর জুনের ৪ থেকে ১০ তারিখ কোনও কথা বলেননি নির্যাতিতা। জুনের ১১ তারিখ মেয়েটিকে তিনজন ব্যক্তি মিলে অপহরণ করে। তারা হল শুভম সিংহ, আওয়াধ নারায়ণ, ব্রিজেশ যাদব। জুনের ১১ থেকে ১৯ তারিখ মেয়েটিকে একটি এসইউভিতে আটকে রাখা হয়। সেইসময় ওই তিন ব্যক্তি মিলে মেয়েটিকে একাধিকবার গণধর্ষণ করে। সিবিআইকে মেয়েটি তার বয়ানে পুরো ঘটনার কথা জানান।

এই ঘটনার পর মেয়েটি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেও, কোথাও কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এরপর এই বছর ৮ এপ্রিল যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন নির্যাতিতা। দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে যোগী সরকার মামলাটি সিবিআইকে হস্তান্তর করে।

শুধু ধর্ষণ নয়, সেঙ্গারের বিরুদ্ধে নির্যাতিতার বাবাকে পুলিশ হেফাজতে থাকা কালে চক্রান্ত করে হত্যা করার অভিযোগও রয়েছে। বর্তমানে ওই বিধায়ক উত্তরপ্রদেশের সীতাপুর জেলে রয়েছে।