উন্নাও/লখনউ: বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ কুলদীপ সিংহ সেনগারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাসভবনের সামনে সপরিবারে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন এক মহিলা। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালে ওই মহিলার বাবার রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হল। নির্যাতিতার পক্ষ থেকে বিধায়কের বিরুদ্ধে জেলে তাঁর বাবাকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে তদন্ত করা হবে এবং ঘটনায় জড়িতদের কেউই রেহাই পাবে না।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারিণী মাখি থানা একালার বাসিন্দা মহিলার বাবার রবিবার রাতে জেলে পেটে ব্যাথা ও রক্ত বমি শুরু হয়। তাঁকে দ্রুত জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। কিন্তু রাত তিনটে নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের বয়স প্রায় ৫০।
বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারিণীর বাবার সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে মৃত্যুর ঘটনা পুলিশ ও প্রশাসনিক মহলে আলোড়ন পড়ে যায়।

মৃতের পরিবারের লোকজন, ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে দেলে হত্যার অভিযোগ আনেন। তাঁদের অভিযোগ, মামলা প্রত্যাহার না করায় গত ৩ এপ্রিল বিধায়কের ভাই অতুল সিংহ নির্যাতিতার বাবাকে মারধর করেছিলেন। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর মাখি থানায় অভিযোগ জানাতে এলে পুলিশ গত পাঁচ এপ্রিল তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করে তাঁকে জেলে পাঠিয়ে দেয়।
এরইমধ্যে রাজ্য সরকারের মুখপাত্র তথা বিদ্যুতমন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা লখনউতে বলেছেন, নির্যাতিতার অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তাহলে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। মামলার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য তা উন্নাও থেকে লখনউয়ে সরানো হয়েছে। নির্যাতিতার পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ন্যায় বিচার প্রদানের জন্য রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে মামলার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার পুষ্পাঞ্জলি জানিয়েছেন, মামলায় চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাখি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অশোক কুমারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। যদিও অভিযুক্ত বিধায়কের বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিধায়কের বিরুদ্ধে জেলে হত্যা করানোর অভিযোগ সম্পর্কে পুষ্পাঞ্জলি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে এখনই কোনও কিছু বলা যায় না। মামলার ম্যাজিস্ট্রেট তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলাধিকারী রবিকুমার এনজি জানিয়েছেন, যেখানে দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছিল, সেখানে এক পক্ষকেই কেন জেলে পাঠানো হল, তার তদন্ত হবে। সেইসঙ্গে মৃতের ময়নাতদন্তের জন্য চিকিত্সকদের একটি প্যানেল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৮ বছরের ওই মহিলা গত বছর সেনগার ও তাঁর ভাইদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। আদালতের নির্দেশে এই ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছিল।
অভিযুক্তর বদলে তাঁর বাবার বিরুদ্ধে পুলিশের ব্যবস্থা গ্রহণে ক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল যোগীর বাসভবনের সামনে গতকাল আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই মহিলা। কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কর্মীরা সেই চেষ্টা বানচাল করে দেন।