নয়াদিল্লি: প্রতি বছরের মতো এবারও প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে পদ্ম পুরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা হল। ভারতের দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক শেখর নায়েক, ইন্দৌরের ‘ডক্টর দাদি’ ভক্তি যাদব সহ অখ্যাত অনেকেই এবারের পদ্ম প্রাপকদের তালিকায় আছেন। যাঁরা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করা সত্ত্বেও সেভাবে প্রচারে আসেননি, তাঁদেরই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পদ্ম পুরস্কার দেওয়া হল।


নবতিপর ভক্তি ইন্দৌরের প্রথম মহিলা হিসেবে এমবিবিএস ডিগ্রি পান। গত ৬৮ বছর ধরে তিনি বিনামূল্যে চিকিৎসা করে চলেছেন। তাঁর হাতেই কয়েক হাজার বাচ্চার জন্ম হয়েছে। তিনি ‘ডক্টর দাদি’ হিসেবেই পরিচিত। এতদিন পরে মানবসেবার স্বীকৃতি পেলেন তিনি।

শেখর ২০১২ সালে দৃষ্টিহীনদের প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপ এবং ২০১৪ সালে একদিনের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে বাবা-মাকে হারান শেখর। চরম দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাতে হয়েছে তাঁকে। এর সঙ্গে দৃষ্টিহীন হওয়ার ফলে সমস্যা তো আছেই। তবে সেসব উপেক্ষা করেই সাফল্য পেয়েছেন তিনি।

রিও প্যারালিম্পিকে হাইজাম্পে সোনাজয়ী মরিয়াপ্পান থঙ্গভেলু ছোট থেকেই লড়াই করছেন। এক মদ্যপ বাস চালক তাঁর ডান পায়ের উপর দিয়ে বাসের চাকা নিয়ে চলে যাওয়ার পর থেকেই সেই পা অক্ষম। ছোটবেলাতেই বাবা তাঁদের ছেড়ে চলে যান। শ্রমিকের কাজ করে তাঁকে মানুষ করেন মা। বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতে করতেই খেলার মাঠেও সাফল্য পেয়েছেন মরিয়াপ্পান।

এছাড়াও এবার অখ্যাতদের মধ্যে পদ্ম পুরস্কার পাচ্ছেন ৫৮ বছর ধরে আদিবাসীদের লোকগান গেয়ে চলা কর্ণাটকের সুকরি বোম্মাগৌড়া। যিনি ‘নাইটিঙ্গেল অফ হলাক্কি’ নামেই বেশি পরিচিত। ওডিশায় রেকর্ড হওয়া সবচেয়ে জনপ্রিয় গান ‘রংবতী’-র গায়ক জিতেন্দ্র হরিপালও পদ্ম পুরস্কার পাচ্ছেন। ১৯৭০ থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে মহিলাদের জন্য একমাত্র পত্রিকা প্রকাশ করে চলা অসমের এলা আহমেদ, কেরলের ৭৬ বছর বয়সি মার্শাল আর্ট শিক্ষিকা মিনাক্ষী আম্মা, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে গত ৪০ বছর ধরে স্বেচ্ছায় দমকল কর্মীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আগুন নেভানোর কাজে ঝাঁপিয়ে বিপীন গণত্র, জলপাইগুড়ির চা বাগানের ‘অ্যাম্বুলেন্স দাদা’ করিমুল হক, ‘হাইওয়ে মসিহা’ চিকিৎসক সুব্রত দাস সহ আরও অনেকেই এবার পুরস্কৃত হচ্ছেন।