লখনউ: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সপ্তাহখানেক ধরে জুভেনাইল হোমে কিশোর। কিন্তু যেভাবে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তার নিন্দায় পরিবার। একজন দাগী অপরাধীর মতো আচরণ কেন করা হল, সে প্রশ্ন তুলেছে তার পরিবার।


উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অভিযোগ রাজ্য পুলিশের হেল্পলাইন নম্বর ১১২-তে হোয়াটসঅ্যাপ করে ওই কিশোর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল।


অঞ্জুল কুমার নামে এক পুলিশকর্মী লখনউয়ের সুশান্ত গলফ সিটি পুলিশ স্টেশনে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। গত রবিরার তার বাড়িতে হাজির হয় পুলিশের সাইবার শাখার দুই সদস্যের দল। তাকে গ্রেফতার করার পরের দিন জুভেনাইল বোর্ডে তোলা হয়। তারপর থেকে সে লখনউয়ের জুভেনাইল হোমে রয়েছে।


ওই কিশোরের বিরুদ্ধে এধরনের অভিযোগে হতবাক পরিবারের সদস্যেরাও। দশম শ্রেণির ওই ছাত্র শান্ত, পড়াশোনায় ভালো, খেলাধুলো নিয়েই থাকে বলে জানিয়েছে পরিবার। ভলিবল খেলতে খুব ভালোবাসে। স্কুলে বিতর্ক প্রতিযোগিতাতেও তার নামডাক ছিল। খেলাধুলোয় সে এতটাই ভালো যে পরিবারের আশা একদিন স্পোর্টস কোটায় সে সরকারি চাকরি পাবে।


কিন্তু সেই ছাত্রের বিরুদ্ধে পুলিশের এ ধরনের অভিযোগে কার্যত ভেঙে পড়েছে পরিবার। ছাত্রের ঠাকুমা বলেছেন, ‘‘আমরা জানি না কী পরিস্থিতিতে কেনই বা হঠাৎ ও এমন ধরনের পোস্ট করেছে। হয়তো কোনও কারণে হতাশ হয়ে পড়েছিল বা মজা করতে এমন ধরনের পোস্ট সে করে থাকতে পারে। গ্রামের একটি লোকও বলবে না ও কারও ক্ষতি করতে পারে। কী হয়েছে সেটা ওর সঙ্গে কথা বলার পরেই আমরা বুঝতে পারব। কিন্তু ওকে পুলিশ যেভাবে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল, তাতে মনে হল ও যেন দাগী অপরাধী।’’


ভাইয়ের সঙ্গে পুলিশের এ ধরনের আচরণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তার দাদাও। তিনি বলেছেন ‘‘ওর কাউন্সেলিং করা যেত বা ওকে ভালো করে বোঝানো যেত কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল।কিন্তু ওকে রাষ্ট্রের শত্রু হিসেবে তুলে ধরা হলো।’’


জুভেনাইল হোমে যাওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে ওই ছাত্রের। বাড়ির জন্য তার মন ছটফট করছে বলে জানিয়েছে। কিন্তু সে কবে ছাড়া পাবে সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। সুশান্ত সাউথ সিটি গল্ফ পুলিশ স্টেশনের এসএইচও সচিন কুমার সিংহ বলেছেন, ‘‘একজন পুলিশকর্মী ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন। রাজ্য পুলিশের নম্বরে মুখ্যমন্ত্রীর নামে হুমকি দিয়েছে ওই ছাত্র। প্রাথমিকভাবে তেমন গুরুতর কিছু না পাওয়া গেলেও, এখনও তদন্ত বাকি।’’