লখনউ: অগস্টের শুরু থেকে দৈনিক চার হাজারের বেশি সংক্রমণ।অগস্টেই ১৩ দিনে ৬৬৪ জনের মৃত্যু।এটাই উত্তরপ্রদেশে করোনার পরিস্থিতি। যোগী রাজ্যের এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন ছাড়া সংক্রমণ আটকানোর আর কোনও উপায় নেই। যদিও যোগী সরকার লকডাউন নিয়ে এখনও কোনও ঘোষণা করেনি।


কোয়রান্টিন সেন্টারে আরও উন্নতমানের সুযোগসুবিধা চেয়ে আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় বলা হয়েছিল, জেলা প্রশাসন বারবার আশ্বাস দিলেও করোনা পরিস্থিতির কোনও উন্নতি তো হয়ইনি, বরং তা আরও খারাপ হয়েছে। প্রশাসনের ভূমিকায় আদালত যে সন্তুষ্ট নয়, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট।

আদালত জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বহু মানুষ বেরিয়ে পড়ছেন। রাস্তাঘাটে, বাজারে ভিড় সামলাতে, সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখতে পারছে না প্রশাসন। আর এই কারণে একাধিক শহরে করোনা বাড়ছে। আদালত জানিয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন, এবং তা কড়াভাবে কার্যকর করা ছাড়া করোনা সংক্রমণ রোখা সম্ভব নয়। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘বেঁচে থাকতে গেলে খাদ্যের প্রয়োজন, কিন্তু উল্টোটা নয়। আমরা মনে করি না এক পক্ষকাল লকডাউন হলে মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাবে।’’  প্রশাসনের একাংশের মতে যোগী সরকারকে এক পক্ষকাল লকডাউন ঘোষণা করার বার্তা প্রকারান্তরে দিল আদালত।

করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা নিয়েও বক্তব্য জানিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। ‘‘সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে আমাদের কোনও সংশয় নেই। কিন্তু সেইসঙ্গে এটাও ঠিক যে, পদক্ষেপ করা হয়েছে তা যথেষ্ট নয়। আরও কড়া এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।’’

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিবকে আদালত প্রশ্ন করেছে লকডাউন ওঠার পরে যখন রাজ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হল তখন করোনা সংক্রমণ রুখতে কী পরিকল্পনা করা হয়েছিল, বা করা হলেও তা কি আদৌ বাস্তবায়িত হয়েছে? যে সব জেলা প্রশাসন নিয়ম লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে বা সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছেঁ?

করোনা রুখতে একটি রুটম্যাপ বা নির্দিষ্ট রূপরেখা স্থির করে আদালতকে জানাতে বলেছেন বিচারপতি। ২৮ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। উত্তরপ্রদেশ সরকারের বক্তব্যে আদালত সন্তুষ্ট না হলে আদালতই হয়তো এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করতে পারে বলেও মনে করছে প্রশাসনের একাংশ। যোগী প্রশাসন কি আদালতের পরামর্শ মেনে ফের লকডাউনের পথে হাঁটবে?  নাকি সংক্রমণ রুখতে বিকল্প পরিকল্পনা করবে, উত্তর খুঁজছেন উত্তরপ্রদেশবাসী।