নয়াদিল্লি: মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। রাজ্যের ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্রগুলির সিলেবাসে এনসিইআরটি-র বইপত্র পড়ানোর তোড়জোড় করছে উত্তরপ্রদেশ মাদ্রাসা বোর্ড। কাজের বাজারের চাহিদার সঙ্গে তাল রেখে সিলেবাসে অদলবদল করা হচ্ছে। সেভাবেই তৈরি করা হয়েছে বইপত্র। মাদ্রাসার পড়ুয়াদের চাকরির বাজারে লড়াইয়ে নামার যোগ্য করে তোলার জন্যই এই উদ্যোগ। মাদ্রাসাগুলিতে ইংরেজি, বিজ্ঞান পড়া বাধ্যতামূলক করা হবে।




উত্তরপ্রদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা পরিষদের রেজিস্ট্রার রাহুল গুপ্তা বলেছেন, আমরা সিলেবাসের একটি নির্দিষ্ট মান বেঁধে দিতে চাইছি, বিশেষত বিজ্ঞান, অঙ্ক, ইংরেজির মতো বিষয়ে। এইসব বিষয়ের ওপর এনসিইআরটি-র বই পড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে।

এখনও পর্যন্ত মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা করে বেরিয়ে আলিম বা মৌলবী হতে পারে পড়ুয়ারা। তবে এই পেশায় বেতন কম। অধিকাংশ মাদ্রাসায় ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও কয়েকটি বড় মাদ্রাসায় গত কয়েক বছরে আধুনিক বিষয়গুলি পড়ানো চালু হয়েছে।

শিক্ষা বিভাগের ডিরেক্টর জানান, প্রস্তাবটি এখনও ভাবনাচিন্তার স্তরে রয়েছে। অফিসাররা কী করে তা কার্যকর করা হবে, তা খতিয়ে দেখছেন। বোর্ড ধর্মীয় শিক্ষার ওপর কোনও হস্তক্ষেপ করবে না, মাদ্রাসায় সেটা স্বাভাবিক ব্যাপার। শুধু আনুষ্ঠানিক দিকটা বদলানো হবে।

উত্তরপ্রদেশে মাদ্রাসার সংখ্যা ১৬ হাজারের বেশি । ৫৬০টি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত, সাড়ে চার হাজার মাদ্রাসা আংশিক সরকারি সাহায্য পায়। সিলেবাসে বদল হবে সব মাদ্রাসাতেই।

ঈদগা ইমাম রশিদ ফিরাঙ্গি মাহলি, যিনি লখনউয়ে সবচেয়ে পুরানো মাদ্রাসাগুলির একটি চালান, এনসিইআরটি-র বই পড়ানোর উদ্যোগে আপত্তির কিছু দেখছেন না। যদিও পরিকল্পনা কার্যকর করার আগে মাদ্রাসার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হলে সরকারি উদ্যোগকে প্রশংসনীয় বলা যেত, জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, আধুনিক শিক্ষার বিরোধী নই আমরা। বস্তুত অনেক বেসরকারি মাদ্রাসাতেই এইসব বিষয় পড়ানো হচ্ছে।

সম্প্রতি মাদ্রাসাগুলিকে তাদের ক্লাসরুমের ছবি বা সেখানকার পুরো এলাকার ছবি আপলোড করতে বলা হয় বোর্ডের ওয়েবসাইটে। কতজন শিক্ষক পড়ান, তাদের আধার নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্যও পেশ করতে বলা হয়। বলা হয়, মাদ্রাসাগুলির কাজকর্মে স্বচ্ছতা আনা, গুণগত মান বাড়াতেই এই পদক্ষেপ।

গত আগস্টে উত্তরপ্রদেশ সরকার মাদ্রাসাগুলিতে স্বাধীনতা দিবস পালন বাধ্যতামূলক বলে জানিয়ে নির্দেশ পাঠায়। এতে প্রবল অসন্তোষ তৈরি হয়। বলা হয়, এহেন নির্দেশে মাদ্রাসাগুলির পরিচালকবর্গ ও তাদের পড়ুয়াদের দেশপ্রেম নিয়ে সংশয় ফুটে উঠেছে।