নয়াদিল্লি: দিল্লির বুরারিতে এক পরিবারের ১১ জনের মৃত্যু রহস্যের জট এখনও খোলেনি। জানা গিয়েছে, পুলিশের সন্দেহ বাড়ির ছোট ছেলে ললিত ভাটিয়ার দিকে। বাড়ি থেকে উদ্ধার রেজিস্টারে লেখা ও ঘরের পরিস্থিতি ইঙ্গিত করছে তন্ত্রমন্ত্র, কুসংস্কারের দিকে।

গতকাল সন্ধেয় শেষ হয়েছে গোটা পরিবারের অন্তিম কাজ। পরিবারের সকলের ফোন ডিটেল খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ললিতের ইতিহাস হাতড়ানো হচ্ছে। কাদের সঙ্গে তিনি কথা বলতেন, ভাই বোন, আত্মীয়, পরিবারের বাচ্চাদের সঙ্গে সম্পর্ক- সব কিছুই আসছে রাডারে।

এবার দেখুন রেজিস্টারে কী লেখা ছিল।

১। খাবার বাইরে থেকে আনাতে হবে।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সত্যিই ঘটনার রাতে খাবার আনা হয়েছিল বাইরে থেকে।

২। ভাল করে বাঁধতে হবে ফেট্টি। চোখে যেন কিচ্ছু দেখা না যায়।

সত্যিই মৃত ১০ জনের চোখে শক্ত করে কাপড় বাঁধা ছিল।

৩। দড়ির সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে সুতির ওড়না বা শাড়ি।

মৃত প্রত্যেকের হাত ওড়নায় বাঁধা ছিল।

৪। ফোন ব্যবহার করা চলবে না।

সত্যিই ৬টি ফোন সাইলেন্ট মোডে এক জায়গায় রাখা ছিল।

৫। কানে তুলো গুঁজতে হবে।

দেহগুলির কান থেকে তুলো উদ্ধার করেছে পুলিশ।

৬। মা উঠতে পারবে না, তাই অন্য ঘরে শোয়ানো যেতে পারে।

মা নারায়ণ দেবীর দেহ অন্য ঘরের মেঝেতে শোয়ানো ছিল।

৭। হাতের ফেট্টি বেশি হলে চোখ বেশি করে বাঁধা যেতে পারে।

সত্যিই কয়েকটি দেহের চোখে মোটা ফেট্টি বাঁধা ছিল।

বাড়ির ছোট ছেলে ললিত দাবি করতেন, মৃত বাবা স্বপ্নে আসেন তাঁর। রেজিস্টারে লেখা আছে, বাবা বলেছেন, শেষ সময়ে ঝটকা লাগবে, আকাশ দুলবে, মাটি কাঁপবে কিন্তু তুমি ভয় পেও না। মন্ত্র বেশি করে জপ কর, আমি বাঁচাব তোমায়। জলের রং যখন বদলে যাবে নীচে নেমে পড়, একে অন্যকে নামতে সাহায্য কর, তোমরা মরবে না, বড় কিছু লাভ করবে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘরে যাগযজ্ঞ হয়েছিল, ১ বোতল জলও রাখা ছিল। ললিত ও তাঁর স্ত্রী টিনার হাত বাঁধা ছিল না বলেও জানা গিয়েছে।

ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বলছে, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। প্রত্যেকের মৃত্যু ঘটেছে শ্বাসরোধের ফলে। পুলিশের ধারণা, ভাটিয়া পরিবারের ধারণা ছিল, শেষমেষ তাঁরা বেঁচে যাবেন। পুলিশ বলছে, সম্ভবত কুসংস্কারের ফলেই গোটা পরিবার এভাবে শেষ হয়ে গিয়েছে। কোনও তান্ত্রিকের এতে হাত আছে কিনা জানার চেষ্টা করছে তারা।