উরি: উরির সেনা ছাউনিতে হামলা করার জন্য নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর কাঁটাতারের বেড়া দুজায়গায় কেটে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল চার জঙ্গি। সেনা তদন্তে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।


শুধু তাই নয়, জঙ্গিদের কাছে যে সেনা ঘাঁটির সম্পর্কে ভাল তথ্য ছিল, তারও প্রমাণ মিলেছে তদন্তে। জানা গিয়েছে, হামলাকারীরা প্রথমেই রান্নাঘর এবং স্টোররুমকে বাইরে থেকে আটকে দেয়। যাতে জওয়ানরা বাইরে না বেরোতে পারে। এরপর তাতে অগ্নি-সংযোগ করে তারা।

এর থেকেই তদন্তদলের আশঙ্কা, ‘সর্ষের মধ্যেই কোনও ভূত রয়েছে’। তাঁদের মতে, ‘ভেতরের সাহায্য’ ছাড়া ঘাঁটি সম্পর্কে এত নিখুঁত ও বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করা কোনওমতেই সম্ভব নয়।

তদন্তে উঠে এসেছে, রান্নার ঘর  ও স্টোর রুমকে আটকে জঙ্গিরা স্টাফ কোয়ার্টারের দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু, তার আগেই জওয়ানদের সঙ্গে তাদের গুলিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। নিহত জঙ্গিদের ব্যবহৃত দুটি জিপিএস সেট উদ্ধার হয়েছে। সেগুলিকে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ-র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, চার হামলাকারী নিষিদ্ধ পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা’র সদস্য। সেনা জানিয়েছে, গত ১১ সেপ্টম্বরে পুঞ্চে লস্কর জঙ্গিদের নিকেশ করেছিল সেনা। বাহিনীর দাবি, এই দলটির সঙ্গে ওই দলটির বহু মিল ছিল। প্রসঙ্গত, উরি হামলা শেষ হওয়ার পরই সেনার তরফে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল জঙ্গিরা আরেক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের সদস্য।

কী দিয়ে সেনা ছাউনিতে আগুন লাগিয়েছিল জঙ্গিরা? সেনা সূত্রে খবর, জঙ্গিরা ছোট ছোট বোতলের মধ্যে পেট্রোলিয়াম জেলি ও জিলেটিনের একটি সংমিশ্রণ নিয়ে এসেছিল। তা দিয়েই আগুন লাগায়।

সেনার তরফে জানানো হয়েছে, এখন পাক-মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলি মূলত শ্যালো ইনফিলট্রেশন-এর ওপর জোর দিচ্ছে। অর্থাৎ, নিয়ন্ত্রণরেখার এপারে প্রথম যে সামরিক প্রতিষ্ঠান আসবে, সেখানেই হামলা করা।

উরি হামলার ঘটনায় গতকালই মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ। গতকালই উরিতে পৌঁছেছেন এনআইএ আইজি জিপি সিংহ। চার জঙ্গির ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। সেখান থেকে জঙ্গিদের পরিচয় সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়ার পর পাক প্রশাসনের সামনে বিষয়টি উত্থাপন করবে ভারত।