নয়াদিল্লি: ভারতের মতোই পাকিস্তানের মাটিতে আশ্রয় পাওয়া মাসুদ আজহারকে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করতে চেষ্টার কসুর নেই আমেরিকার। কিন্তু বাধা সেই চিন। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা কমিটির তালিকায় মাসুদের নাম উঠলে পাকিস্তান সমেত একাধিক দেশে তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হবে, তার যাতায়াতের ওপরও নিষেধাজ্ঞা চাপবে।
ডিসেম্বরে পঠানকোট হামলার মাথা মাসুদকে রাষ্ট্রপুঞ্জকে দিয়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করাতে ভারতের উদ্যোগ চিন ভেস্তে দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ বাদে ওই কুখ্যাত জঙ্গি নেতার বিরুদ্ধে সক্রিয় হয় মার্কিন প্রশাসন। সরকারি সূত্রের খবর, গত মাসের মাঝামাঝি ব্রিটেন, ফ্রান্সের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা কমিটি ১২৬৭-তে মাসুদের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পেশ করে আমেরিকা। ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়, জয়েশ-ই-মহম্মদ যেখানে ঘোষিত সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী, তার নেতারা ছাড় পেতে পারে না। কিন্তু বাগড়া দেয় চিন। তারা আপত্তি তুলে প্রস্তাবটি আটকে দেয়। ওই কমিটিতে কোনও প্রস্তাব গ্রহণ বা আটকে দেওয়ার বা তার ওপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ ঠেকিয়ে রাখার ১০ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে চিন মাসুদের বিরুদ্ধে আনা ওই প্রস্তাবে বেঁকে বসে।
চিনের ওই পদক্ষেপ স্থায়ী হবে ৬ মাস। তারপরও তার মেয়াদ তিন মাস বাড়ানো যায়। এই সময়সীমার মধ্যে ঠেকিয়ে রাখার পদক্ষেপকে 'ব্লক'-এ বদলেও দেওয়া যায়, যার ফলে প্রস্তাবটির আয়ু শেষ হয়ে যাবে।
ঘটনা হল, ২০০১ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ নিষিদ্ধ করে জঈশকে। কিন্তু লাগাতার চিন মাসুদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার জারির প্রয়াসে বাধা দিয়ে চলেছে। 'চিরকালের বন্ধু' পাকিস্তানকে খুশি রাখাই চিনের এহেন আচরণের কারণ বলে ব্যাখ্যা আন্তর্জাতিক মহলের।
পঠানকোটে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে গত বছরের জানুয়ারিতে হামলার পর ফেব্রুয়ারিতেই ভারত আল কায়েদা বিধিনিষেধ কমিটির আওতায় মাসুদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপের দাবিতে রাষ্ট্রপুঞ্জে চিঠি দেয়। কিন্তু প্রবল বাধা দেয় চিন। দুবার তাতে টেকনিক্যাল আপত্তি তুলে ডিসেম্বরে শেষ পর্যন্ত ভারতের প্রস্তাব ভেস্তে দেয় তারা।