Live updates: রাষ্ট্রপতি ভবনে নৈশভোজ শেষ, দেশের উদ্দেশে রওনা ট্রাম্পের
রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু, লোকসভা অধ্যক্ষ ওম বিড়লা ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। ছিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল ও হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। এছাড়া ছিলেন এ আর রহমান ও সেলিব্রিটি শেফ বিকাশ খান্না।
ট্রাম্প বলেছেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ভাল করতে চাই।প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে ইতিবাচক কথা হয়েছে।করোনা ভাইরাস নিয়েও মোদির সঙ্গে কথা হয়েছে’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘ভারতের বাজার খুবই সম্ভাবনাময়’ ।
তালিবান শান্তি চুক্তি সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছেন, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি মনে করি মনে ভারতও চাইবে এমনটা হোক। এ ব্যাপারে খুব কাছাকাছি পৌঁছনো গিয়েছে। সবাই এই বিষয়ে খুশি।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘সন্ত্রাস দমনে আমেরিকা যা করেছে, অন্য কেউ করেনি।‘আইএস জঙ্গিদের ধ্বংস করতে পদক্ষেপ করেছে আমেরিকা।রাশিয়া, ইরানও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিক।’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেছেন, এই বিষয়টি ভারতের এবং আশা করছি ভারত সরকার তাদের জনগনের জন্য সঠিক সিদ্ধান্তই নেবে।
পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসবাদের বাড়বাড়ন্ত সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছেন, এই ব্যাপারে আমরা প্রচুর কথা বলেছি। আমি বলেছি, এক্ষেত্রে সাহায্যের জন্য আমার পক্ষে যা করা সম্ভব তা করব। কারণ, আমার দুই ভদ্রলোক (প্রধানমন্ত্রী মোদি ও পাক প্রধানমন্ত্রী)-র সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ভালো। মধ্যস্থতা বা সাহায্যের জন্য যা কিছু করার, তা করব। ওরা (পাকিস্তান) কাশ্মীর নিয়ে কাজ করছে।
মার্কিন রাষ্ট্রপতি বলেছেন, আমি এ ব্যাপার (মধ্যস্থতা) নিয়ে কিছু বলিনি। কাশ্মীর অবশ্যই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বড় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে তারা কাজ করবে। তারা দীর্ঘদিন ধরে তারা এটা করে আসছে।
ট্রাম্প বলেছেন, একটি সার্বিক বাণিজ্য চুক্তির পথে দারুণ অগ্রগতি হয়েছে। দুই দেশের কাছে গুরুত্বপূ্র্ণ চুক্তিতে উপণীত হওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী। আমার ক্ষমতায় আসার পর ভারতে মার্কিন রফতানি ৬০ শতাংশ বেডেছে এবং উচ্চমাণের মার্কিন শক্তির রফতানি ৫০০ শতাংশ বেড়েছে।
ট্রাম্প বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক এত শক্তিশালী কখনও ছিল না।
ভারত ও আমেরিকার মধ্যে ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তির কথা জানিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, অ্যাপাচে ও এমএইচ-৬০ রোমিও হেলিপক্টার সহ অত্যাধুনিক মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য ভারতের সঙ্গে ৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্প্রসারণ ঘটেছে। এই চুক্তির ফলে দুই দেশের প্রতিরক্ষাগত সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
সন্ত্রাসবাদে যারা মদত দেয় তাদের বিরুদ্ধে একযোগে লড়াইয়ের সংকল্পের কথা জানিয়েছেন মোদি। এ ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সহযোগিতার ব্যাপারে সহমত হয়েছি। পাকিস্তানের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ নিশ্চিহ্ন করতে আমরা কৃতসংকল্প।
মোদি জানান, ‘প্রতিরক্ষা-শক্তি-তথ্যপ্রযুক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।আলোচনা হয়েছে নিরাপত্তা ইস্যুতেও। মাদক পাচার, মাদক সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যে ভারসাম্য এসেছে।গত এক দশকে বাণিজ্য বেড়েছে দু’অঙ্কের হারে।দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।বড়সড় বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সন্ত্রাসবাদে যারা মদত দেয়, তাদের কাঠগড়ায় তুলতে আমরা প্রয়াস আরও জোরদার করার সংকল্প নিয়েছি।
মোদি আরও বলেছেন, ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্ব, তা নিরাপত্তা, শক্তি সংক্রান্ত কৌশলগত অংশীদারিত্ব, বাণিজ্য বা মানুষে মানুষে সম্পর্ক, সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমাদের অংশীদারিত্বের গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় হল ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক’।
প্রেক্ষাপট
নয়াদিল্লি: দুদিনের সফরে গতকাল ভারতে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমদাবাদে তাঁকে নমস্ত ট্রাম্প অনুষ্ঠানে স্বাগত জানানো হয়। তার আগে সবরবতী আশ্রমে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নমস্তে ট্রাম্প অনুষ্ঠানের পর আগরায় তাজমহল পরিদর্শন করেন সস্ত্রীক ট্রাম্প। ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনেও ব্যস্ত কর্মসূচি মার্কিন প্রেসিডেন্টের। আজ দিল্লিতে হায়দরাবাদ হাউসে ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। দু’দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা। যৌথ সাংবাদিক বৈঠকও করবেন ভারত-আমেরিকার রাষ্ট্রপ্রধান।
ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়ামের মতো বেশ কয়েকটি ভারতীয় পণ্য রফতানির উপর শুল্কের বোঝা চাপিয়েছেন ট্রাম্প। ‘জেনারালাইজড সিস্টেম অফ প্রেফারেন্স (জিএসপি)’, যার আওতায় ভারত এত দিন বিশাল মূল্যের পণ্য বিনা শুল্কে রফতানি করতে পারত, সেই সুবিধা ট্রাম্প তুলে দিয়েছেন। আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি পূরণের জন্য আমেরিকার কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যের রফতানি চান ট্রাম্প।
উল্টোদিকে ভারতে এখন শিল্পের মন্দা। তাই ভারত চায় আরও বেশি করে আমেরিকার বাজার তাদের জন্য খুলে দেওয়া হোক। অসংখ্য প্রতিভাবান ভারতীয় আমেরিকায় যেতে চান, তাই ভারত চায়, পেশাদারদের জন্য আমেরিকা তার ভিসা-নীতি উদার করুক।
আর তাই শেষ অবধি ট্রাম্প-মোদির বৈঠকে কে কার কাছ থেকে কী পায়, সেদিকেও নজর থাকবে বিশেষজ্ঞ মহলের।
ট্রাম্পের সম্মানে মঙ্গলবার মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সম্মানে নৈশভোজ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। কিন্তু, রাষ্ট্রপতির নৈশভোজে যাচ্ছেন না প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ।
সকাল ১০টায় রাষ্ট্রপতি ভবনে মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানানো হবে।
সকাল সাড়ে ১০টায়
রাজঘাটে মহাত্মা গাঁধীর সমাধিস্থলে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সকাল ১১টায় দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে বৈঠক হবে।
বেলা ১২টা ৪০-এ হায়দরাবাদ হাউসে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর ট্রাম্প-মোদি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন।
দুপুর ৩টেয় দিল্লির মার্কিন দূতাবাস রুজভেল্ট হাউসে বাণিজ্যিক বৈঠক।
বিকেল ৪টে নাগাদ ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ।
এরপর সন্ধে সাড়ে ৭টায় রাষ্ট্রপতি ভবনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সম্মানে নৈশভোজ।
রাত ১০টায় স্ত্রী, কন্যা-জামাইকে নিয়ে ভারত ছাড়বেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -