নয়াদিল্লি: কারও কথা মেনে নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যায় রাশ টানবে না পাকিস্তান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বুধবার এমনই জানিয়ে দিল ইসলামাবাদ।


সূত্রের খবর, রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরির সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। সেখানে পাক পরমাণু অস্ত্রের প্রসার নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করে মার্কিন প্রশাসন। জানা গিয়েছে, পাক প্রধানমন্ত্রীকে দেশের পরমাণু অস্ত্র কর্মকাণ্ড কমানোর চাপ দেন কেরি।

রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মালিহা লোধিকে উদ্ধৃত করে পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি, জবাবে নওয়াজ জানিয়ে দেন, তাঁদের পরমাণু কর্মসূচিকে রোধ করা যাবে না। তিনি জানিয়ে দেন, কারও চাপে এসে পাকিস্তান নিজেদের পরমাণু কর্মসূচি খর্ব করতে পারবে না।

বৈঠকে পাক প্রধানমন্ত্রী নিজেদের যুক্তির স্বপক্ষে ভারতকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন বলে জানা গিয়েছে। লোধি জানান, কেরিকে শরিফ জানিয়েছেন, পাকিস্তানের থেকে যা প্রতিশ্রুতি চাওয়া হচ্ছে, তা আগে ভারতের থেকে চাওয়া হোক।

এখানেই শেষ নয়। শরিফ বলেছেন, ভারতে যে পরমাণু (অস্ত্র) কর্মকাণ্ড চলছে, আগে তাকে বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিক বিশ্ব। সাংবাদিক সম্মেলনে লোধির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পাক বিদেশ সচিব সরতাজ আজিজ। তাঁর দাবি, সন্ত্রাসদমনে পাকিস্তান যত আগ্রাসী ভূমিকা নিয়েছে, অন্য কোনও দেশ নেয়নি।

পাশাপাশি, পরমাণু জ্বালানি সরবরাহ গোষ্ঠী (এনএসজি)-তে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিও কেরির সামনে উত্থাপন করেন শরিফ। যদিও, এই ইস্যু নিয়ে আলোচনায় কী উঠে এসেছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি লোধি বা আজিজ। তবে, আন্তর্জাতিক মহলের মতে, শরিফের কথাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনও গুরুত্ব দেয়নি।

প্রসঙ্গত, এদিনই সাধারণ সভায় বক্তৃতা দেবেন পাক প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি কাশ্মীর অস্থিরতা প্রসঙ্গ উত্থাপন করবেন বলেই ধারণা আন্তর্জাতিক মহলের। গত দুদিন ধরে, বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন তিনি।

কিন্তু, কোথাও চিড়ে ভেজেনি। সব দেশই সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কাশ্মীর নিয়ে তারা ভাবিত নয়। উল্টে তারা সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানকে আক্রমণ করেছে। ইতিমধ্যেই, পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র’ ঘোষণার দাবি নিয়ে বিল পেশ হয়েছে মার্কিন কংগ্রেসে।

ফলে, উরি-হামলার পরে আন্তর্জাতিক মহলে কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছে পাকিস্তান। তাই কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে এনে নিজেদের হারানো জমি ফেরানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে ইসলামাবাদ। এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।