নয়াদিল্লি: মানবঢাল হিসাবে কাউকে ব্যবহার করা সেনাবাহিনীর স্বাভাবিক কাজকর্মের ধারা নয়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বিচার করে, খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে সংশ্লিষ্ট সেনা অফিসারের। বললেন সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত।

কাশ্মীরে পাথরবাজির হাত থেকে বাহিনীর জওয়ানদের বাঁচাতে সেনা অফিসার মেজর নিতিন লিটুল গগৈ কাশ্মীরী যুবক ফারুক আহমেদ দারকে সেনার জিপে বেঁধে ঘোরানোয় ব্যাপক সমালোচনা হলেও নিজের বক্তব্যে অনড় তিনি। মেজর গগৈকে সাহসিকতার স্বীকৃতি দিয়ে মেডেল দিয়েছেন সেনাপ্রধান। এজন্য তাঁরও প্রবল সমালোচনা হয়।

তিনি আজ বলেন, সাধারণত কাউকে মানবঢাল করা পদ্ধতি হিসাবে সমর্থন করা হয় না। কিন্তু পরিস্থিতি অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেদিন যে অবস্থা ছিল, তাতে ওঁকে একাই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। ওরকম পরিস্থিতিতে নির্দেশের অপেক্ষায় থাকার মতো জায়গায় ছিলেন না উনি। কারও যদি এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্য উপায় জানা থাকে, আমাদের বলুন। আমরা ভেবে দেখব।

সেনাবাহিনী ট্রিগার হ্যাপি অর্থাত্ গুলি চালাতে তাদের হাত নিশপিশ করে, এমন ধারণাও মানতে নারাজ রাওয়াত। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির সঙ্গে অর্থবহ আলোচনা হতে গেলে জম্মু ও কাশ্মীরে হিংসার মাত্রা কমিয়ে আনা প্রয়োজন। কেননা আলোচনা আর হিংসা, দুটো একসঙ্গে চলতে পারে না।

পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, মিডিয়ায় যতটা দেখানো হয়, ততটা খারাপ নয় জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি। সেখানকার বাসিন্দারা সেনার বিরোধী, এমন ধারনাও খারিজ করেন সেনাপ্রধান।
সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাতের সমালোচনারও জবাব দেন তিনি।

কারাত বলেছেন, কাশ্মীরে পাথরবাজ যুবকরা পাথরের বদলে বন্দুক ব্যবহার করলে সেনার সুবিধা হয়, এহেন মন্তব্য করে সেনাপ্রধান কাশ্মীরীদের বন্দুক হাতে তুলে নিতেই প্ররোচনা দিচ্ছেন।

রাওয়াত দাবি করেন, তাঁকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে। বলেন, এরকম ছায়াযুদ্ধের পরিস্থিতিতে শত্রুকে শনাক্ত করা যায় না। কারণ সে কোনও ইউনিফর্ম বা ব্যান্ড পরে থাকে না যা দেখে তাঁকে সন্ত্রাসবাদী বলে শনাক্ত করা সম্ভব। একমাত্র সে গুলি চালালেই কী করতে হবে, বোঝা সম্ভব। সেনা তো পাথর ছুঁড়তে পারে না। তার কাজের পদ্ধতি নয় ওটা।