লখনউ:  উন্নাও গণধর্ষণকাণ্ডে অবশেষে গ্রেফতার অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার। অভিযুক্তের কঠিন থেকে কঠিনতম সাজার দাবি তুলেছেন নির্যাতিতা। এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ১৭ বছরের ওই কিশোরী জানিয়েছেন, একসময় তিনি ও তাঁর ভাই-বোনেরা অভিযুক্তকে দাদা বলে ডাকতেন। তাঁরা মাখি গ্রামে প্রতিবেশী ছিলেন।

 

২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত সেঙ্গার এবং নির্যাতিতার পরিবারের যথেষ্ট সুসম্পর্কই ছিল। এমনকি গতবছর যখন কিশোরী বিধায়কের বাড়ি গিয়েছিলেন তাঁর এক প্রতিবেশীর সঙ্গে, তখন তাঁকে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক চাকরির প্রস্তাব পর্যন্ত দিয়েছিলেন।

একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কিশোরী দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক এবং বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাদ যা জেরে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, সবটাই জানিয়েছেন। গত বছর ৪ জুন এই ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। তারপর মেয়েটিকে হুমকি দেওয়া হয়, যদি এই ঘটনার কথা জানাজানি করে, তাহলে তার বাবা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মেরে ফেলা হবে। এরপর গত বছর ১১ জুন মেয়েটিকে অপহরণ করে অভিযুক্ত বিধায়কের দলবল। এরপর তাকে বেশ কয়েকদিন ধরে গণধর্ষণ করা হয়। তারপর বিক্রি করে দেওয়া হয় একজনের হাতে। সেখান থেকেই পরে উদ্ধার হয় ১৭ বছরের ওই কিশোরী।

গতবছর ধর্ষণের কথা প্রথম অগাস্ট মাসে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে জানান নির্যাতিতা এবং তাঁর কাকা। কিন্তু তারপর থেকে এই ঘটনায় আর কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এরপর দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং উত্তরপ্রদেশের ডিজিপিকেও ধর্ষণের কথা চিঠি লিখে জানান ওই কিশোরী। তারপর কোনও লাভ হয়নি, বরং তাঁকে পাল্টা হুমকি দেওয়া হয়, এই পুরো ঘটনা থেকে ওই বিজেপি বিধায়ককে বাইরে রাখতে। তারপর থেকে মেয়েটি ও তাঁর বাবা আর গ্রামে ফেরেননি।

গত সপ্তাহে যখন মেয়েটির বাবাকে প্রকাশ্যে নিম গাছের সঙ্গে বেঁধে গায়ে জল ঢেলে বন্দুক ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারা হয় তখনই ফের প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেন ওই কিশোরী। দেখা করার চেষ্টা করেন যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে। কিন্তু এবারও তাঁকে ফিরতে হয় খালি হাতে। এখন তাঁর বাবাকে মরতে হয়েছে, নির্যাতিতার পরিবারের নিরাপত্তাও প্রশ্নের মুখে। এই অবস্থায় লড়াই থেকে পিছু হঠার কোনও প্রশ্নই নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন নির্যাতিতা। জীবন দিয়েও তিনি এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।