ভোপাল: ২০০২-এর গোধরা পরবর্তী দাঙ্গা, হিংসার পর গুজরাতের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বরখাস্ত করবেন, চূড়ান্ত করে ফেলেছিলেন সেসময়কার প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ি, কিন্তু এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে লালকৃষ্ণ আডবাণী ইস্তফার হুমকি দেওয়ায় নিরস্ত হন। এমনই দাবি করলেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা।
শুক্রবার এখানে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, গুজরাতের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর অটলবিহারী বাজপেয়ি সিদ্ধান্ত নেন, মোদির ইস্তফা দেওয়া উচিত। ২০০২ এ গোয়ায় বিজেপি জাতীয় এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে যাওয়ার সময় অটলজি মনঃস্থির করেন, যে মোদিজি ইস্তফায় রাজি না হলে তাঁকে বরখাস্ত করবেন। দলের ভিতর বৈঠক হয়। আমার যতদূর জানা, আডবাণীজি অটলজিকে জানিয়ে দেন, মোদিজিকে সরালে তিনিও সরকার ছাড়বেন। তাই বাজপেয়িজি সিদ্ধান্ত রদ করেন, মোদিজিও বহাল থেকে যান।
প্রয়াত রাজীব গাঁধী নৌবাহিনীর যু্দ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাটকে ‘ব্যক্তিগত ট্যাক্সি’ হিসাবে ব্যবহার করতেন বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অভিযোগ নিয়ে যশবন্ত বলেন, এগুলি আদৌ ইস্যু নয়, প্রাক্তন নৌ কর্তারা ইতিমধ্যেই এ নিয়ে বক্তব্য জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি লোকসভা নির্বাচন মোদি সরকারের কাজকর্মের ওপর হচ্ছে, দেশের ইতিহাস নিয়ে হচ্ছে না বলে অভিমত জানিয়ে কটাক্ষ করেন, এরকম মিথ্যা বলা একজন প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শোভন নয়।
ভোটপ্রচারে পাকিস্তানকে ইস্যু করায়ও মোদির সমালোচনা করেন বাজপেয়ি সরকারের মন্ত্রী যশবন্ত। বলেন, ভোটে পাকিস্তান ইস্যু তোলা দুর্ভাগ্যজনক। উনি আমাদের দেশকে পাকিস্তানের পাশে বসিয়েছেন। কিন্তু আমরা কি পাকিস্তানের সমগোত্রীয়? চিনকে নিয়ে কোনও কথা নেই, যারা পাকিস্তানকে নিয়ে বাগাড়ম্বরে অবশ্যই খুশি হবে। এটা করা হচ্ছে চিনকে নিয়ে পাকিস্তানের মতো প্রতিক্রিয়া হয় না বলে।
প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রীর অভিযোগ, মোদি সরকার পরিসংখ্যান নিয়েও ‘কারচুপি’ করছে। বর্তমান এনডিএ সরকারের চেয়ে আগের ইউপিএ জমানায় জিডিপি হার বেশি ছিল বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, পরবর্তী সরকার এক ভঙ্গুর অর্থনীতি পাবে।
নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আলোচনার ভাষার মান নিচে নামিয়ে আনার অভিযোগও তোলেন তিনি। বলেন, প্রধানমন্ত্রী শালীন ভাষায় কথা বলবেন, এটাই আশা করা হয়, কিন্তু সেটা হচ্ছে না।