প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলায় প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প চালু করেনি রাজ্য সরকার। তিনি বলেছেন, গোটা দেশে কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প চালু হয়েছে, একমাত্র ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ।ষ সেখানে ৭০ লক্ষের বেশি কৃষক এই প্রকল্পের লাভ পান না। তাঁরা এই টাকা পান না, কারণ বাংলার সরকার নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে কৃষকদের বঞ্চিত করেন। এর পাল্টা জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বিবৃতি জারি করে বলেছেন, আমার আদর্শ, দেশ গঠনের কারিগরদের দর্শনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমি আন্তরিকভাবে, নিজের সবটুকু দিয়ে, পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সেবা করেছি। আমার কাছে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পরিবারের সদস্য। আমার পূর্ণ আস্থা আছে,তাঁরা আমাকে এসব মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে বিচার করবেন না। বরং আমরা রাজ্যের জন্য কী করেছি, সকলে বুঝতে পারবেন এবং যাঁরা আমাদের এবং রাজ্যের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতে চাইছেন, তাঁদের মোক্ষম জবাব দেবেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেছেন, মোদি সরকার পশ্চিমবঙ্গকে কোনও সাহায্য করেনি। এখনও কেন্দ্রের কাছে বকেয়া ৮৫ হাজার কোটি টাকার একটা অংশ মেটায়নি, যার মধ্যে জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ বাবদ ৮ হাজার কোটি টাকাও রয়েছে। যদি পশ্চিমবঙ্গকে সাহায্য করতে চান, তাহলে বকেয়া টাকার অন্তত একটা অংশ মিটিয়ে দিন, যাতে আমরা রাজ্যের প্রয়োজন মেটাতে পারি।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের অন্যতম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বামেদেরও আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একটি বিশেষ রাজনৈতিক ভাবধারার দল পশ্চিমবঙ্গে ৩০ বছরের বেশি শাসন করেছে। তাদের আমলে রাজ্যের অবনতি হয়েছে। সারা দেশ তা জানে। সেই দলগুলিও পশ্চিমবঙ্গে কৃষকদের উপকার নিয়ে একটা কথাও বলেছে না। বরং তারা কৃষকদের নামে দিল্লির মানুষদের হয়রানির কাজে জুড়েছে এবং দেশের অর্থনীতিকে বরবাদ করছে।
পরোক্ষভাবে বামেদের আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন যে দলগুলি এপিএমসি-মান্ডি দেখতে পাচ্ছে না, তারা ভুলে গেছে যে, কেরলে এপিএমসি-মান্ডি নেই। তারা কিন্তু এ নিয়ে কেরলে কোনও বিক্ষোভ দেখায় না।
উল্লেখ্য, কেরলে ক্ষমতাসীন এলডিএফের নেতৃত্বে রয়েছে সিপিএম।
১৫ বছর আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মমতাজীর পুরানো ভাষণ শুনলে বুঝতে পারবেন যে, এই ভাবধারা রাজ্যের কতটা সর্বনাশ করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর এই আক্রমণের জবাব দিয়েছেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘কোন রাজ্যের কৃষক এক বছরে ১২ হাজার টাকা পেয়েছেন! প্রধানমন্ত্রী মিথ্যে বলছেন। ২০১৪-র পর রাজ্যে সভা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ৩৪ বছর ধরে রাজ্যের যে ক্ষতি করেছে বামেরা, সেই ক্ষতিপূরণের জন্য দিদিকে কিছুটা সময় দিতে হবে। তখন কার দালালি করছেন? এখন আম্বানি-আদানিদের দালালি করছেন, তখন মমতার দালালি করেছিলেন।কারণ, কমিউনিস্টদের, বামপন্থাকে শেষ করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কন্ট্র্যাক্ট পেয়েছিলেন। ভোটের সময় বললেনি দুটো লাড্ডুর কথা! এখানে মমতার সরকার থাকবে, দিল্লিতে বিজেপি সরকার! যে মুকেশ আম্বানির স্বার্থে এই কৃষি আইন করা হয়েছে, সেই মুকেশ আম্বানি একহাতে মমতার হাত ধরেছেন, অন্য হাতে মোদির হাত ধরেছেন। কর্পোরেট পুঁজির সেবা করছেন এই দুজন’।