খান্ডোয়া: স্বাধীনতা সংগ্রামী চন্দ্রশেখর আজাদের জন্মদিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর আসার কথা। র‌্যালিতে সমর্থকদের ঝেঁটিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তুলে নেওয়া হয়েছে সব স্কুল বাস। শিক্ষক শিক্ষিকারা জানিয়ে দিয়েছেন, বাস না থাকার জন্য ৯ আর ১০ তারিখ স্কুল বন্ধ। দুদিনের পড়ে পাওয়া ছুটি মহানন্দে ক্যারাম খেলে কাটাতে পারত বছর ১৪-র ছেলেটি। তার বদলে সে চিঠি লিখে বসল স্বয়ং নরেন্দ্র মোদীকে। প্রশ্ন করল, আপনার র‌্যালি কি আমাদের স্কুলের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? হাকিম নড়লেও হুকুম না নড়ার এই দেশেও অবিশ্বাস্য কাজ করেছে তার এই চিঠি। জেলা কালেক্টরের নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর র‌্যালির জন্য গণ পরিবহনে হাত দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে।


মধ্যপ্রদেশের আলিরাজপুর জেলার ভাবরা গ্রামে চন্দ্রশেখর আজাদের জন্মভিটেয় মঙ্গলবার আসার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। আর পাশের জোথরাদা গ্রামে তাঁর র‌্যালি। সেখানে শুরু করার কথা নয়া ক্যাম্পেন '৭০ সাল আজাদি, ইয়াদ করো কুরবানি'।

এতক্ষণ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর র‌্যালিতে ভিড় দেখানোর অতি উৎসাহে প্রশাসন এলাকার সব স্কুল বাস তুলে নেয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের জানিয়ে দেয়, ৯ আর ১০ তারিখ বন্ধ থাকবে স্কুল।

আর এই নোটিশ পাওয়ার পরেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখে স্থানীয় বিদ্যাকুঞ্জ স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র দেবাংশ জৈন। সে লেখে, 'আমেরিকায় আপনার ভাষণ আমি শুনেছি। অসংখ্য মানুষ সেখানে ছিলেন। কিন্তু কারও স্কুল বাসে করে আসার দরকার পড়েনি'। তার প্রশ্ন, 'আপনার র‌্যালির দাম কি আমাদের লেখাপড়ার থেকে বেশি'? নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ভক্ত বলে দাবি করেছে দেবাংশ। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে সম্বোধন করেছে 'শিবরাজ মামা' বলে। তার আবদার, 'মোদী আঙ্কল' যেন শিবরাজ মামাকে বলে দেন, র‌্যালির জন্য স্কুল বাসে হাত না দিতে। তার কথা শোনা হলে, সে মাথা উঁচু করে বলতে পারবে, মোদী আঙ্কলের র‌্যালিতে লোক ধরে আনতে হয় না, মানুষ এমনিই আসে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই চিঠি ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় টনক নড়েছে প্রশাসনের। জেলা কালেক্টরের নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর র‌্যালির জন্য গণ পরিবহন তুলে নেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। ফলে ৯, ১০- দু’দিন দেবাংশের স্কুল যাওয়ায় আর কোনও সমস্যা নেই।