সাইক্লোন, হ্যারিকেন ও টাইফুন কী?
এর সংক্ষিপ্ত উত্তর হল এই ধরনের ঝড়ের নাম এগুলি। ক্রান্তীয় সাইক্লোন হল ঘূর্ণিঝড়, যার রয়েছে নিম্নচাপ কেন্দ্র।এর বৈশিষ্ট্য হল তীব্র ঝড়, বজ্রবিদ্যুতের সর্পিল গতি ও ব্যাপক বৃষ্টি।
আটলান্টিক মহাসাগর ও উত্তর-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাহরের এই ঝড় হ্যারিকেন নামে পরিচিত। উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে এই ঝড় টাইফুন এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলে এই ঝড়কে ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস বা সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম হিসেবে অভিহিত করা হয়।
ঝড়ের নামকরণ কীভাবে হয়?
অতীতে ঝড়ের কোন নামকরণ করা হত না। পরে দেখা যায় যে, ঝড়ের বিশেষ নামকরণ করতে তা সতর্কতামূলক ব্যবস্থাকে কার্যকরী করতে সহায়কত হয়। কারণ, ঝড়টিকে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। এজন্য ঝড়ের সংক্ষিপ্ত, বিশেষ নাম এক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
বর্তমানে ক্রান্তীয় সাইক্লোন ও হ্যারিকেনের নামকরণের জন্য রয়েছে একটি যথাযথ ব্যবস্থা ও নির্দিষ্ট কিছু সংস্থা। এখনকার এই ঝড়টির মতো ট্রপিক্যাল সাইক্লোনের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক সংস্থা তাদের বার্ষিক বা দ্বিবার্ষিক বৈঠকে এই নামগুলি চূড়ান্ত করে। পাঁচটি ট্রপিক্যাল সাইক্লোন রিজিওনাল সংস্থা রয়েছে। এগুলি হল-ইএসসিএপি/ ডব্লুএমও টাইফুন কমিটি, ডব্লুএমও/ইএসসিএপি প্যানেল বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস, আরএ ওয়ান ট্রপিক্যাল সাইক্লোন কমিটি, আরএ ফোর হ্যারিকেন কমিটি ও আরএ ফাইভ ট্রপিক্যাল সাইক্লোন কমিটি।
একইভাবে হ্যাকিকেনগুলির নাম ঠিক করতে হয়েছে একটি হ্যারিকেন কমিটি। যে নামগুলি বাছাই করা হয়, তা যেন কোনও ব্যক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না হয় এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে তা যেন পরিচিত হয়। ঝড়ের নামকরণের ক্ষেত্রে শুধু মহিলাদের নাম ব্যবহার নিয়ে সমালোচনার পর এখন পুরুষ নামও তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
আমপান কীভাবে বেছে নেওয়া হল?
ডব্লুএমও-র তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালে ক্রান্তীয় সাইক্লোন সংক্রান্ক ডব্লুএমও/ইএসসিএপি প্যানেলের মাসকটে সপ্তম অধিবেশনে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের ব্যাপারে সহমত হয়। আট সদস্য দেশের তথ্যের সহায়তায় ২০০৪ থেকে নামকরণ শুরু হয়। তারপর থেকে আরও আটটি দেশ এই প্যানেলে যোগ দিয়েছে।
পূর্ব নির্ধারিত তালিকায় শেষ নাম আপ-পান। আর ২০২০-তে এটাই প্রথম ঝড়ের নামকরণ। এই তালিকায় ছিল ফণী, মহা-র মতো ঝড়ের নামও।
ভবিষ্যতে ক্রান্তীয় ঘৃর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হবে ১৬৯ নামের তালিকা থেকে। এই তালিকা শুরু হচ্ছে নিসগারা, গতি ও নিভার-এর মতো নাম দিয়ে। এছাড়াও রয়েছে শাহিন, গুলাব, তেজ, আগ-এর মতো নাম। ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ সংক্রান্ত পুরো তালিকা ডব্লুএমও-র ওয়েবলসাইটে দেওয়া হয়েছে।
বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে তৈরি হওয়া ঝড়গুলি নির্দিষ্ট তীব্রতায় পৌঁছলে এগুলির নামকরণের ভার রয়েছে আরএসএমসি নয়াদিল্লি ট্রপিক্যাল সেন্টারের।