নয়াদিল্লি: প্ল্যানটা ছকেছিল ভালই। ধরা পড়ে গেল শেষ মুহূর্তে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ল অক্ষয় নামে ১৮ বছরের ওই তরুণ।


দিল্লির ছেলে অক্ষয়ের টাকাকড়ির টানাটানি চলছিল। তাই ঠিক করেছিল, এক আত্মীয়কে অপহরণ করে তার বাবা মায়ের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা আদায় করবে। সপ্তাহদুয়েক আগে এক বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে অক্ষয় ও তার বন্ধুরা এই অপহরণের ছক কষে। তারা টার্গেট করে অক্ষয়ের তুতো ভাই যশ সারস্বতকে।

শ্রেয়া ত্যাগী নামে ফেসবুকে একটি জাল প্রোফাইল খোলে অক্ষয়। প্রোফাইল খাঁটি দেখানোর জন্য একে তাকে তাতে অ্যাড করে নেয়। ছবিতে লাইকও পড়তে থাকে। একদিন পর অক্ষয় যায় যশের বাড়ি। তখন কথাচ্ছলে নিজের ফোন তুলে দেয় যশের হাতে। স্ক্রিনে ছিল শ্রেয়ার প্রোফাইল পিকচার।

যশ শ্রেয়া সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করতে থাকে। অক্ষয় বলে, শ্রেয়া যশকে পছন্দ করে, ফেসবুকে বন্ধুত্ব পাতাতে চায়। তারপর ঝপ করে যশের ফোন টেনে নিয়ে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দেয় শ্রেয়াকে। পরে তা অ্যাকসেপ্ট করে নেয়।

এরপর শুরু হয় রাতের পর রাত ধরে যশ ও শ্রেয়ারূপী অক্ষয়ের গল্পগুজব। গল্প চলে হোয়াটসঅ্যাপেও। অবশেষে শ্রেয়া যশকে উত্তর পূর্ব দিল্লির ভজনপুরায় তার সঙ্গে দেখা করতে বলে। যশ ফুলটুল কিনে ডেটে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়। দূর থেকে তার ওপর লক্ষ্য রাখে অক্ষয় ও তার বন্ধুরা। কিন্তু দিনের বেলা অপহরণ করা কঠিন বুঝে তাকে গিয়ে বলে, শ্রেয়া রাতে দেখা করতে বলেছে।

রাত এগারোটা নাগাদ যশ হাতে গোলাপ নিয়ে ভজনপুরা উড়ালসেতুতে শ্রেয়ার সঙ্গে দেখা করতে যায়। তখনই অক্ষয় ও তার তিন বন্ধু ভাড়া করা একটি গাড়িতে এসে তাকে টেনে নেয় ভেতরে।

এরপর বাগপতে নিয়ে গিয়ে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে যশের বাবাকে ফোন করে তারা। ছেলের প্রাণের আশঙ্কায় বাবা মা নির্দিষ্ট জায়গায় টাকা নিয়ে হাজিরও হন। টাকা নিয়ে যশকে গাড়ি থেকে ঠেলে বার করে দেয় অপহরণকারীরা। তারপর চম্পট দেয়।

এতক্ষণ ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু বাদ সাধে পুলিশ। যশ মুক্তি পাওয়ার পর এই অপহরণকারীদের ব্যাপারে জানতে পারে তারা, জানাজানি হয় অক্ষয়ের ব্যাপারেও। বাড়ির লোক, আত্মীয়দের কাছে মুখ দেখানো যাবে না বুঝে এক বন্ধুর বাড়ি গিয়ে গলায় দড়ি দেয় অক্ষয়। এর একদিন পর পুলিশ গ্রেফতার করে তার তিন বন্ধু রবি, রাজা ও দীন দয়ালকে। শেষ হয় ব্যর্থ একটি অপরাধের গল্প।