নৈনিতাল: ফেসবুকে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট। এরপর মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা এবং বিয়ে করে প্রতারণার ঘটনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের বিজনোরের ধামপুরের বাসিন্দা কৃষ্ণা সেন ওরফে সুইটি সেন যে কীর্তি করেছেন,তাতে তাজ্জব উত্তরাখণ্ডের পুলিশ। ছেলে সেজে ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুত্ব করে দু-দুজন মেয়েকে বিয়ে করে সুইটি। এরপর দুই 'স্ত্রীর' মধ্যে একজনের ওপর পণের দাবিতে অত্যাচার চালায় সে। অবশেষে গতকাল বুধবার উত্তরাখণ্ডের হলদওয়ানির পুলিশ সুইটিকে গ্রেফতার করেছে।
নৈনিতালের পুলিশ সুপার জন্মেজয় খান্ডুরি জানিয়েছেন, সুইটি ২০১৩-তে কৃষ্ণা সেন নামে ফেসবুকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। প্রোফাইলে সে নিজের যে ছবিগুলি দিয়েছিল, সেগুলি ছিল পুরুষের বেশে। এরপর ছেলে সেজে সে বিভিন্ন মেয়েদের সঙ্গে চ্যাট করতে শুরু করে এবং তাঁদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে।
ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হওয়ার পর হলদওয়ানির কাঠগোদাম একালায় এক তরুণীর সঙ্গে সুইটি দেখা করতে আসে। সময়টা ২০১৪। নিজেকে আলিগড়ের এক সিএফএল বাল্বের ব্যবসায়ীর ছেলে বলে ওই তরুণীর কাছে দাবি করে সে। পরে দুজনের বিয়েও হয়।
এরপরই সুইটি তাঁর ডবল এমএ ডিগ্রিধারী 'স্ত্রী'কে পণের দাবিতে মারধর শুরু করে। সুইটি ওই তরুণীর বাবা-মার কাছ থেকে সাড়ে আট লক্ষ টাকা নেয় একটা কারখানা খুলতে।
এরইমধ্যে একই কায়দায় কালাধুঙ্গি শহরের আরও একটি মেয়েকে টোপ দিয়ে ২০১৬-র এপ্রিলে বিয়ে করে। সুইটির প্রথম বিয়ের সময়ও অতিথি হিসেবে হাজির ছিল তার 'দ্বিতীয় স্ত্রী'।
দ্বিতীয় বিয়ের কর সুইটি হলদওয়ানির তিকোনিয়া এলাকায় একটা বাড়ি ভাড়া করে সেখানে 'দুই স্ত্রী'কেই রাখে।
কালাধুঙ্গির মেয়েটি জানতে পেরে যায় যে, সুইটি পুরুষ নয়, সে মহিলা। এই অবস্থায় টাকার টোপ দিয়ে 'দ্বিতীয় স্ত্রী'র মুখ বন্ধ রাখে সুইটি।
এরইমধ্যে কাঠগোদাম এলাকার মেয়েটি সুইটির বিরুদ্ধে হলদওয়ানি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। এরইভিত্তিতে পুলিশ সুইটিকে গ্রেফতার করলে তার অপকর্মের কথা ফাঁস হয়ে যায়।
পুলিশের জেরায় সুইটি জানিয়েছেন, ছোট থেকেই সে টমবয় ধরনের এবং নিজেকে ছেলে বলেই মনে করত।
বিয়ের পর সুইটি তার 'স্ত্রীদের' তার শরীরে দেখতে বা স্পর্শ করতে দিত না। সেক্স টয় ব্যবহার করে ভুয়ো শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ সুইটির মেডিক্যাল পরীক্ষা করেছে। পরীক্ষায় সে মেয়ে বলেই প্রমাণিত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পরিচয় ভাঁড়ানো, প্রতারণা, নথিপত্র বদলের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। সে মহিলা, তাই তার বিরুদ্ধে পণের দাবিতে নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করা যায় না।
পুলিশ সুইটির পরিবারের লোকজনদের খোঁজ করছে। তাঁরা সুইটির বিয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন।