দেহরাদুন: বিতর্কিত মন্তব্য শঙ্করাচার্য স্বামী স্বরূপানন্দের। অনেক লড়াই, আন্দোলনের পর শনি শিঙ্গনাপুর মন্দিরে ঢোকার অধিকার পেয়েছে মেয়েরা। কিন্তু স্বরূপানন্দের বক্তব্য, মহারাষ্ট্রের শনি শিঙ্গনাপুর মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢোকার ক্ষমতা পেয়ে মেয়েরা যেন নিজেদের বিজয়িনী বলে না ভাবে, নিজেদের ঢাক না পেটায়। শনির উপাসনা কিন্তু ওদের জীবনে দুর্ভাগ্য ডেকে আনতে পারে। মহিলাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মতো অপরাধ বেড়ে যেতে পারে। হরিদ্বারে সাংবাদিকদের সামনে এ কথা বলেছেন তিনি।

 

শনি পুজো করা মেয়েদের পক্ষে শুভ হয় না বলে অভিমত স্বরূপানন্দের। তিনি বলেছেন, শনি শিঙ্গনাপুর মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকতে পেরে উল্লসিত না হয়ে মেয়েরা বরং এমন কিছু করতে পারত যা পুরুষদের মাদক জাতীয় উত্তেজনা সৃষ্টিকারী পদার্থ খেয়ে মেয়েদের ধর্ষণ  করা থেকে বিরত রাখতে পারে!

 

প্রত্যাশিতভাবেই দ্বারকা-সারদাপিঠের শঙ্করাচার্যের এহেন মন্তব্যে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাতের মত, ভারতের সংবিধান ও বাস্তবের সঙ্গে শঙ্করাচার্যের মতের বিস্তর ফারাক। অবশ্যই তা প্রত্যাখ্যান করা উচিত। বৃন্দার প্রশ্ন, শঙ্করাচার্য কি বলতে পারেন, এতগুলি বছর ধরে মন্দিরে পা রাখার অধিকার না থাকায় কি মেয়েরা কোনও সমস্যায় পড়েনি? কী করে উনি এ কথা বলতে পারলেন যে, মেয়েরা মন্দিরে গেলে ক্ষতি হবে ওদের? এত বছর ধরে মেয়েরা মন্দিরে যেতে পারেনি। কিন্তু অগনিত মেয়ে যে এত কঠিন সমস্যা, বিপদে পড়েছে!

 

 

প্রসঙ্গত, শনি শিঙ্গনাপুর মন্দিরে মেয়েদের ঢোকার ওপর গত ৪০০ বছরের নিষেধাজ্ঞা গত সপ্তাহে তুলে নেওয়া হয় ভূমাতা ব্রিগেড নামে মহিলা অধিকার আন্দোলন সংগঠনের লাগাতার আন্দোলনের ধাক্কায়। ভূমাতা ব্রিগেড লিঙ্গ বৈষম্য অবসানের দাবিতে যে আন্দোলন করছিল, তাকে স্বীকৃতি দিয়ে বম্বে হাইকোর্টও পুজোয় মহিলা, পুরুষের সমানাধিকারই বহাল রাখে।

 

এদিন আরও এক বিতর্কিত মন্তব্য করেন স্বরূপানন্দ। মহারাষ্ট্রের মন্দিরে সাঁইবাবার পূজো হয় বলেই রাজ্যে খরা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন,  মহারাষ্ট্রের মন্দিরে সাঁইবাবাকে বসানো হয়েছে। তার পায়ের নীচে রাখা হয়েছে গণেশ, হনুমানকে! যাঁদের পুজো পাওয়ার কথা নয়, মন্দিরে যখন তাঁদেরই পুজো হয়, তখন খরা তো অনিবার্য।