নয়াদিল্লি: পাকিস্তানে কেন যাব? ভারতই তো আমাদের দেশ। বললেন রাজস্থানের আলোয়ারে গোরক্ষকদের নৃশংস হামলায় নিহত পেহলু খানের ছেলে ইরশাদ খান।


কৃষি সংকট, গো রাজনীতি ও পিটিয়ে খুন সংক্রান্ত বিষয়ে একটি সভায় ইরশাদ তাঁর বাবাকে খুনের ন্যায়বিচারের কাতর আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দোষীদের রেহাই দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

রাজস্থান থেকে গরু কিনে ট্রাকে চাপিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ৫৫ বছরের দুধের ব্যবসায়ী পেহলু খান। গত ১ এপ্রিল আলোয়ারে তাঁদের ওপর চড়াও হয় তথাকথিত গোরক্ষকরা। পেহলুর সঙ্গেই তাঁর দুই ছেলে ইরশাদ ও আরিফ। গোরক্ষকদের বেধড়ক মারে মৃত্যু হয় পেহলুর।  সেদিনের সেই ভয়াবহ ঘটনার কথা বলতে গিয়ে এখনও শিউরে উঠছেন আরিফ। ১৯ বছরের আরিফ বলেছেন, বেল্ট, লাঠি, লোহার ডান্ডা নিয়ে ওরা আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তাঁর বাবার চোখে, পেটে আঘাত লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার দুই দিন পর মৃত্যু হয় তাঁর বাবার।

পেহলু খানের কাকা হুসেন খানও ওই সভায় হাজির ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, অভিযুক্তদের জামিন দেওয়ার জন্য চাপ তৈরি করা হচ্ছে। হুসেন বলেন, পেহলু ন্যায় বিচার না পেলে তাঁরা রাজস্থানে আদালতে গিয়ে আত্মহত্যা করবেন।

২৪ বছরের ইরশাদ বলেছেন, ধর্মের নামে বিভেদ তৈরির চেষ্টা চলছে।একটা বিশেষ গোষ্ঠী মুসলিমদের পাকিস্তানে চলে যেতে বলছে। তিনি আরও বলেছেন, এ দেশে তো চিরদিন একইসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করে এসেছে হিন্দু ও মুসলিমরা।

ইরশাদের কথায়, কিছু লোক চায় না যে, দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য বজায় থাকুক। এমনটা হলেই তাদের ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির উদ্দেশ্য চরিতার্থ হয়। মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্যই পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটে।

দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবের ওই সভায় ইরশাদ আরও বলেছেন, 'বহু মুসলিমকেই নিগ্রহ ও গালিগালাজের শিকার হতে হয়েছে। অনেককে একটি গোষ্ঠী ধর্মীয় স্লোগান দিতে বাধ্য করেছে। ওই গোষ্ঠী আমাদের পাকিস্তানে চলে যেতেও বলেছে। কিন্তু আমি বলতে চাই, আমরা পাকিস্তানে যাব না। আমি এখানেই জন্মেছি।ভারতই আমার মাতৃভূমি'।