নয়াদিল্লি: প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রবীণ নেতা যশবন্ত সিনহার সঙ্গে বর্তমান  অর্থমন্ত্রী  অরুণ জেটলির মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়ছে। প্রথমে একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত নিবন্ধে যশবন্ত মোদী সরকারের আর্থিক নীতির সমালোচনা করেছিলেন।এর জবাবে জেটলি নাম না করে যশবন্তকে ৮০ বছর বয়সে কর্মপ্রার্থী বলে কটাক্ষ করেন। জেটলি যশবন্তের কার্যকালের সময় আর্থিক ক্ষেত্রে ব্যর্থতার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন জেটলি। উল্লেখ্য, অটল বিহারী বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় ১৯৯৮ থেকে ২০০২ পর্যন্ত সময়ে অর্থমন্ত্রী ছিলেন যশবন্ত। জেটলির এই কটাক্ষের জবাব দিতে গিয়ে যশবন্ত বলেছেন, তিনি যদি চাকরি চাইতেন, তাহলে জেটলি আজ অর্থমন্ত্রী পদে থাকতেন না।


অন্য একটি সংবাদপত্রে লেখা নিবন্ধে যশবন্তের অভিযোগের জবাব দিয়েছেন তাঁরই ছেলে তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত সিনহা। এই বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ যশবন্ত। অসামরিক পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্তকে দিয়ে এভাবে অর্থনীতি সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়াটা একেবারেই সমীচিন হয়নি বলে মনে করছেন যশবন্ত। এবারে পুরো বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।

যশবন্ত বলেছেন, আর্থিক নীতি সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায়িত্ব অর্থমন্ত্রীর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নয়। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তিনি কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন না। ছেলেকে তাঁর বিরুদ্ধে নামিয়ে পুরো বিষয়টিই গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন যশবন্ত।

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তিনিও ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে পারেন। কিন্তু ওই ফাঁদে পা দেবেন না। তিনি আরও বলেছেন, দেশের স্বার্থের থেকে বড় কিছু নয়। তাঁর প্রশ্নের কারণে যদি তাঁর ছেলের কেরিয়ারের ক্ষতি হয় তাহলেও তিনি শঙ্কিত নন।

গতকাল এক গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠানে যশবন্তকে একহাত নিয়েছিলেন জেটলি। ইউপিএ জমানার অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকেও নিশানা করেন তিনি। জেটলি বলেন, ‘আমি এখনও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী হইনি। প্রাক্তন হিসেবে ‘নিবন্ধ’ লেখক হওয়ার মতো স্বাধীনতা তাঁর নেই।’ দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমলে নীতি পঙ্গুত্বের কথা বলে চিদম্বরমকে এবং ১৫ শতাংশ অনুৎপাদক সম্পদের কথা বলে যশবন্তকে নিশানা করেন জেটলি।’ ‘ইন্ডিয়া অ্যাট ৭০, মোদী অ্যাট ৩.৫’ শীর্ষক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ কথা বলার পরে ফের নাম না করেই যশবন্তকে কটাক্ষ করে তিনি জানান, বইটির সঠিক নাম হতে পারত ‘জব অ্যাপ্লিক্যান্ট অ্যাট ৮০’ (অর্থাৎ, ৮০ বছর বয়সি এক জন কর্মপ্রার্থী)।

জেটলি আরও বলেন, দেশে মন্দার যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তার কোনও ভিত্তি নেই। যাঁরা নোট বাতিলের বিরোধিতা করছেন, তাঁরা কালো টাকার পক্ষে।ভারতীয় অর্থনীতির হাল ফিরছে। সরকার অর্থনীতি নিয়ে যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে, তার সুফল মিলতে শুরু করেছে।