নয়াদিল্লি: নোট বাতিল ইস্যুতে বিরোধীদের হই-হট্টগোলের জেরে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের আরও একদিন নষ্ট হল।


দফায় দফায় সভা ভণ্ডুল হওয়ার জন্য এদিন লোকসভা ও রাজ্যসভা – উভয় কক্ষেই স্বাভাবিক কার্যকর্ম হয়নি। এদিনের নিয়ে টানা চারদিন সভার স্বাভাবিক কার্যপ্রক্রিয়া বিঘ্নিত হল।


লোকসভায় মোদী সরকারকে ক্রমাগত নিশানা করতে থাকে বিরোধীরা। বিরোধী দলের শক্তি বাড়াতে এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ায় এডিএমকে-ও। বিরোধীদের দাবি, ভোটাভুটির ব্যবস্থা থাকবে এমন ধারাতেই (ধারা ২৬৭) নোট বাতিল বিতর্ক শুরু করতে হবে। যদিও, সরকারপক্ষ সেই দাবি পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে।


কেন্দ্রের সংসদ-বিষয়ক মন্ত্রী বিরোধীদের আহ্বান করে জানান, সরকার সব ইস্যুতে খোলা মনে আলোচনায় রাজি। তবে, কংগ্রেস ও তৃণমূলের লোকসভা দলনেতা যথাক্রমে মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি তোলেন, বিতর্কের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। এই হই-হট্টগোলের মাঝে সাময়িক মুলতুবি হয় নিম্নকক্ষ।


অন্যদিকে, রাজ্যসভাতেও ধরা পড়ে একই চিত্র। সেখানে, মোদীর উপস্থিতি সংক্রান্ত দাবির পাশাপাশি আরও একটি দাবি পেশ করা হয় বিরোধীদের পক্ষ থেকে। তারা জানায়, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের পর এযাবৎ ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে যে ’৭০ জন’ মারা গিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেক পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সরকারকে।


ক্ষতিপূরণের দাবি প্রথম তোলেন জনতা দল ইউনাইটেড (জেডি-ইউ) সুপ্রিমো শরদ যাদব। সপা ও বসপা-র সাংসদরা মোদীর উপস্থিতির দাবি তোলেন। তাঁদের দাবিকে সমর্থন জানান কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদ। এরমধ্যেই ‘অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা’ লেখা প্ল্যাকার্ড তুলে ওয়েলে নেমে পড়ে তৃণমূল।


এদিন, নোট বাতিলকে ঘিরে সরকারকে তুলোধনা করার সময়ে বিরল নজির গড়ল বিরোধীরা। একদিকে যেমন কংগ্রেস ও তৃণমূল একসুরে মোদী সরকারের সমালোচনায় মুখর। ঠিক তেমনই, উত্তরপ্রদেশের দুই প্রবল প্রতাপশালী প্রতিদ্বন্দ্বী সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টিকেও দেখা গেল গলায় গলা মিলিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে।


এই পরিস্থিতিতে, সরকারের ট্রেজারি বেঞ্চের তরফে পাল্টা স্লোগান তোলা হয় যাতে এই ইস্যুতে বিতর্ক শুরু করা যায়। কিন্তু, নাছোড় বিরোধীদের সামনে তা সম্ভব না হওয়ায় দুপুর তিনটে নাগাদ দিনের মত মুলতুবি হয়ে যায় উচ্চকক্ষ।