শ্রীনগর: জনতা-নিরাপত্তারক্ষী সংঘর্ষে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল কাশ্মীর। এক তরুণের মৃত্যু হল এবং ৩০ জন আহত হয়েছেন। নিহত তরুণের নাম ওয়াসিম আহমেদ লোন (২২)। বারামুলা জেলার সোপোর-কুপওয়ারা রোডে নাদিহাল অঞ্চলে জনতার পাথর ছোঁড়া প্রতিহত করতে যখন সেনা  জওয়ানরা গুলি চালান, তাতেই মৃত্যু হয় ওয়াসিমের।

বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ডাকা বনধে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য শ্রীনগরের কিছু অঞ্চল এবং উপত্যকার অন্যত্র কার্ফু জারি করা হয়েছিল। কিন্তু সোপোর থেকে কুপওয়ারা ফেরার সময় আক্রমণের মুখে পড়ে সেনাবাহিনীর কনভয়। উন্মত্ত জনতা সেনা জওয়ানদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালালে ওয়াসিমের বুকে গুলি লাগে। তাঁকে বারামুলা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অন্যান্য জায়গাতেও একইভাবে সেনা জওয়ানদের লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হতে থাকে। সেনাবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে ৩০ জন আহত হয়েছেন।

ওয়াসিমের মৃত্যুর পর উপত্যকায় অশান্তি বেড়েছে। নাদিহাল সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নতুন করে বিক্ষোভের খবর আসছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ওয়াসিম সেনাবাহিনীর কনভয়ে পাথর ছুঁড়ছিলেন না। তিনি নিজের জমিতে ধান চাষের কাজ করছিলেন। সেই সময়ই গুলি চালায় সেনাবাহিনী। সেই গুলিতেই মৃত্যু হয় ওয়াসিমের। গত ৮ জুলাই হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে শুরু হওয়া অশান্তির জেরে এখনও পর্যন্ত উপত্যকায় ৮৩ জনের মৃত্যু হল। পুলিশের অবশ্য দাবি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে প্রশাসন।

এক পুলিশ আধিকারিক বলেছেন, শুক্রবারের সাপ্তাহিক প্রার্থনার পর থেকেই নতুন করে উপত্যকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কায় শ্রীনগরের শহরতলিতে পাঁচটি থানা এলাকা এবং বাতামালু ও মৈসুমা অঞ্চলে কার্ফু জারি করা হয়। বনধ ও ১৪৪ ধারায় সাধারণ মানুষের জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার জেরে উপত্যকার জনজীবন স্তব্ধ হয়ে যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকান, অন্যান্য বাণিজ্যকেন্দ্র, পেট্রল পাম্প বন্ধ ছিল। মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। প্রিপেইড নম্বর থেকে আউটগোয়িং কলও বন্ধ রয়েছে।