নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের কৃষি বিলের বিরুদ্ধে কৃষক বিক্ষোভে উত্তাল হরিয়ানা, পঞ্জাবে রাস্তায় নেমে পুলিশের লাঠির মুখে ব্যতিক্রমী সাহস দেখিয়ে জলকামানের কলের মুখ বন্ধ করতে ট্র্যাক্টর-ট্রলি থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন এক যুবক। নাম নবদীপ। অম্বালা জেলার জালবেরা গ্রামের স্থানীয় কৃষক আন্দোলনের নেতা জয় সিংহের ছেলে নবদীপ গত সোস্যাল মিডিয়ায় চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছেন পুলিশের সামনে এভাবে রুখে দাঁড়ানোয়। প্রচণ্ড শীতের মধ্যে জলকামান থেকে জল ছুঁড়ে কৃষকদের থামানোর চেষ্টা হচ্ছিল। তিনি এভাবে সাহস দেখিয়ে এগিয়ে যাওয়ায় সোস্যাল মিডিয়ায় ‘হিরো’ তকমা দেওয়া হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রের কাছে।


সেই নবদীপকেই এবার খুনের চেষ্টায় অভিযুক্ত করা হল। পারাও থানায় তাঁর নামে এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের হরিয়ানা শাখার প্রেসিডেন্ট গুরনাম সিংহ চারুনি সহ যাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আছেন নবদীপ। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার পাশাপাশি দাঙ্গা বাঁধানো, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মবিধি ভাঙার অভিযোগও আনা হয়েছে, যাতে সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাবাস।

প্রতিবাদ আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠা নবদীপ স্নাতক। ২৫০-র ওপর গ্রামের কৃষকদের মিছিলে সামিল হন তিনি। সেদিনের দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে বৃহস্পতিবার সারাদিন সংঘর্ষ, অশান্তির পর শুক্রবার শেষ পর্যন্ত নয়াদিল্লিতে দিল্লি পুলিশের কাছ থেকে ঢোকার অনুমতি আদায় করেন হাজার হাজার চাষি। রাজধানীতে কৃষিবিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর পৌঁছে দিতে চান তাঁরা।

নবদীপ বলেছেন, পড়াশোনা শেষ করে বাবার সঙ্গে চাষবাসে হাত দিই। বাবা কৃষক নেতা। কখনও কোনওরকম বেআইনি কাজকর্মে জড়াইনি। প্রতিবাদী চাষিদের লড়াকু চেতনা, দায়বদ্ধতা দেখে অনুপ্রাণিত হয়েই জলকামানের গাড়িতে উঠে তার কল বন্ধ করে দিই। কেননা এতে কৃষকরা কষ্ট পাচ্ছিলেন। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, বিক্ষোভের মাধ্যমে আমরা দিল্লি ঢোকার অনুমতি চাইছিলাম। কিন্তু পুলিশ রাস্তা আটকায়। কোনও জনবিরোধী আইন পাশ হলে তার প্রতিবাদ, সরকারকে প্রশ্ন করার অধিকার আমাদের আছে।