নয়াদিল্লি: বিজেপি-র বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে একজোট হলেও, রাজ্য়ে তৃণমূলকে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছে কংগ্রেস। সেই নিয়ে এবার I.N.D.I.A জোটের মধ্যেই দ্বিমত তৈরি হল। ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (NCP) প্রধান শরদ পওয়ার (Sharad Pawar) তীব্র সমালোচনা করেছেন বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury)। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুকথা বলার অভ্যাস বন্ধ করতে পরামর্শ দিয়েছেন।
জাতীয় স্তরে পরস্পরের সঙ্গে হাত মেলালেও, বাংলায় প্রতিপক্ষ হিসেবেই অবস্থান তৃণমূল এবং কংগ্রেসের। নিয়োগ, গরু, কয়লা পাচার নিয়ে লাগাতার তৃণমূলকে আক্রমণ করে চলেছে কংগ্রেস। ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়েও প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলছে তারা। ডেঙ্গি সংক্রমণে লাগাতার বৃদ্ধি সত্ত্বেও মমতা স্পেন সফরে গেলেন কী করে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ অধীর।
মঙ্গলবার সেই নিয়ে অধীরকে কার্যতই তিরস্কার করেন শরদ। তিনি বলেন, "অধীররঞ্জন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে তিক্ত সম্পর্ক দেখেছি আমরা। মমতাকে কুকথা বলার বদভ্যাস রয়েছে ওঁর, যা মোটেই ভাল নয়। এই আচরণ কাম্য নয় ওঁর থেকে। তবে তাতে বিরোধীদের জোটে কোনও প্রভাব পড়বে না।"
আরও পড়ুন: Maneka Gandhi: ‘কসাইদের গরু বিক্রি করে ISKCON’, মেনকার অভিযোগে শোরগোল, এল তীব্র প্রতিক্রিয়া
একসময় রাজ্যে পরস্পরের হাত ধরাধরি করে চললেও, বিগত কয়েক বছরে পরস্পরের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে তৃণমূল এবং কংগ্রেস। ২০২১ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় ফিরলেও, শূন্যে নেমে যায় কংগ্রেস। পরে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হলেও, তৃণমূলে যোগ দেন বায়রন বিশ্বাস। তার জেরে দুই দলের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে ওঠে।
সেই নিয়ে লাগাতার কড়া ভাষায় তৃণমূল এবং মমতাকে আক্রমণ করতে দেখা যায় অধীরকে। সম্প্রতি মমতার স্পেন-সফর নিয়েও কটাক্ষ ছুড়ে দেন তিনি। রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণ যখন উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে, সেই সময় মমতা বিদেশ পাড়ি দিলেন কোন যুক্তিতে, প্রশ্ন তোলেন তিনি। রাজ্য সরকার ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যর্থ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতিকে 'মমতা মেড ডেঙ্গি, গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড ডেঙ্গি' বলে উল্লেখ করেন। সেই আবহেই অধীরকে সংযত হতে বললেন শরদ।
যদিও জাতীয় স্তরে তৃণমূলের হাত ধরা নিয়ে রাজ্য কংগ্রেসেই দ্বিমত দেখা দিয়েছে। রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল যখন বিদ্ধ, একযোগে বিরোধীরা মিলে আক্রমণ শানিয়ে চলেছে, সেই আবহে দিল্লিতে জোড়াফুল শিবিরের সঙ্গে হাত মেলানো নিয়ে অসন্তুষ্ট অনেকেই। দলের অন্দরে সেই ক্ষোভও সামাল দিতে হচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেসকে।