নয়াদিল্লি: এবার কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসাসনেস (ISKCON). ISKCON কসাইদের গরু বিক্রি করে বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ মেনকা গাঁধী (Maneka Gandhi)। তাতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন ISKCON কর্তৃপক্ষ। মেনকার অভিযোগ একেবারে 'সারবত্তাহীন' এবং 'মিথ্যা' বলে জানালেন তাঁরা।

  


প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মেনকা পশু অধিকার নিয়েও কাজ করেন। পশুকল্যাণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নিজের মতামতও জানান। সম্প্রতি ISKCON-এর বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তোলেন তিনি। বলেন, "ISKCON দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় ঠগ। গোশালা খুলে রেখেছে বলে দেখিয়ে সরকারের থেকে সুবিধা নেয়, বৃহদাকার জমিও হস্তগত করে।"


সেখানেই থামেননি মেনকা। সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুর গোশালায় গিয়ে কী দেখেন, তা-ও জানান। মেনকা বলেন, "সেখানে একটি গরুও এমন ছিল না যে দুগ্ধবতী নয়। অথচ একটি বাছুরও চোখে পড়ল না। অর্থাৎ তাদের বিক্রি করে দেওয়া হয়। কসাইদের গরু বিক্রি করে ISKCON. ওরা যে সংখ্যক গরু বিক্রি করে, আর কেউ করে না। তার পর আবার ওরা 'হরে রাম হরে কৃষ্ণ' গেয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। বলে বেড়ায়, দুধের উপরই নাকি ওদের জীবন নির্ভরশীল। ওরা যে সংখ্যক গরু বিক্রি করেছে, তা আর কেউ বোধ হয় করেনি এখনও পর্যন্ত।"


সোশ্যাল মিডিয়ায় মেনকার ওই  মন্তব্য ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। বিষয়টি সামনে আসতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান ISKCON কর্তৃপক্ষ। বিবৃতি জারি করে বলা হয়, 'শ্রীমতি মেনকা গাঁধীর একটি ভিডিও নজরে এসেছে। ISKCON-এর বিরুদ্ধে তিনি যে অভিযোগ করেছেন, তা মিথ্যা এবং সারবত্তাহীন। ISKCON গরুর দেখভাল কী উপায়ে করে, তা নির্দিষ্ট জায়গায় আগেই তুলে ধরা হয়েছে।


আরও পড়ুন: Ram Temple: রামনবমীতে কপালে পড়বে নরম রোদ, অযোধ্যায় ‘রামলাল্লা’র প্রাণপ্রতিষ্ঠায় থাকবেন মোদি


ISKCON আরও বলে, ‘দেশে ৬০টির বেশি গোশালা চালায় ISKCON. শয়ে শয়ে গরু, মহিষ, ষাঁড়কে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়। আজীবন তাদের সেবা করে কেটে যায়। বর্তমানে গোশালায় যত গরু রয়েছে, রাস্তা থেকে কাউকে আহত অবস্থায়, কাউকে আবার এলোমেলো ঘুরে বেড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বলি হওয়ার মুহূর্তে উদ্ধার করেও আনা হয় অনেককে’। প্রশাসন চাইলে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পারে বলেও জানান ISKCON কর্তৃপক্ষ।


ISKCON-এর জাতীয় মুখপাত্র যুধিষ্ঠির গোবিন্দের কথায়, 'মেনকা গাঁধীর অভিযোগ সারবত্তাহীন এবং মিথ্যা। শুধু ভারতেই নয়, গোটা বিশ্বে গরু এবং মহিষের নিরাপত্তায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ISKCON. গরুকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই কাজ করি আমরা, তাদের কসাইয়ের হাতে বিক্রি করতে নয়'।মেনকার মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন ISKCON কর্তৃপক্ষ। বলা হয়, ‘শ্রীমতী গাঁধী পশু অধিকার কর্মী হিসেবে সুপরিচিত। ISKCON-এর শুভাকাঙ্খী হিসেবেও তাঁকে চেনেন অনেকে। তাই তাঁর এই মন্তব্যে স্তম্ভিত আমরা’।


'হরে কৃষ্ণ আন্দোলনে'র স্রষ্টা ISKCON. গোটা বিশ্বে শতাধিক মন্দির রয়েছে তাদের। অনুগামীর সংখ্যাও লক্ষ লক্ষ। তারা কসাইকে গরু বিক্রি করে বেল মেনকা অভিযোগ করায় তাই বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর কয়েক মাস আগেও খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল ISKCON. সেবার সন্ন্যাসী অমোঘ লীলা দাস স্বামী বিবেকানন্দ এবং রামকৃষ্ণ পরমহংসের সমালোচনা করেন। সমালোচনার মুখে পড়ে তাঁকে নিষিদ্ধ করে ISKCON.