নয়াদিল্লি: খুব বেশিদিন সমাজের সব স্তরের মানুষকে মদত দিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য ভারতের নেই। লকডাউন তুলে নেওয়ার ব্যাপারে ভারতকে ‘আরও পরিণতমনস্কতা’ দেখানোর পরামর্শ দিলেন রঘুরাম রাজন। ‘ধাপে ধাপে মাত্রা বেঁধে’ দেশের অর্থনীতির দরজা খোলার কথাও বলেছেন তিনি।
নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের শৃঙ্খলা ভাঙতে গত ২৪ মার্চ থেকে চালু হওয়া লকডাউনের মেয়াদ ৩ মে শেষ হওয়ার পর আবার বাড়বে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। এই প্রেক্ষাপটেই অর্থনীতির ওপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব নিয়ে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে অনলাইনে আলোচনায় এই অভিমত জানান রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর।



রাহুল জানতে চান, বর্তমান পরিস্থিতিতে গরিবদের সাহায্য করতে হলে কত অর্থের প্রয়োজন। অতিমারীর এই চলতি অধ্যায়ে ভারতের এজন্য ৬৫০০০ কোটি টাকা লাগবে এবং ভারতের মোট জিডিপি মাথায় রাখলে এর আয়োজন করা সম্ভব বলে অভিমত জানান রাজন।
কংগ্রেসের সোস্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে এমন মতামত বিনিময় প্রক্রিয়া প্রথম। রাজন বলেন, অর্থনীতির ক্ষেত্রটি খুলে দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের আরও বুদ্ধিমত্তা দেখিয়ে সীমিত মাত্রায়, যদিও যতটা দ্রুত সম্ভব তাকে চালু করতে হবে, যাতে লোক কাজ পেতে শুরু করে। সর্বস্তরের মানুষকে খুব বেশিদিন মদত দিয়ে চলার ক্ষমতা আমাদের নেই। তুলনামূলক ভাবে গরিব দেশ বলে লোকে খানিকটা কম সঞ্চয় দিয়েই শুরু করে। চিরকালের জন্য লকডাউন রেখে দেওয়া খুব সহজ, কিন্তু অবশ্যই অর্থনীতির স্বার্থে তা চালিয়ে যাওয়া যায় না।
রাহুল বলেন, পরিকাঠামো মানুষে মানুষে সংযোগ ঘটায়, সুযোগ তৈরি করে, কিন্তু বিভাজন, ঘৃণার পরিবেশ থাকলে মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়। দেশে ঘৃণা, বিভাজনের আবহ রয়েছে, এটা বড় সমস্যা তৈরি করে। রাহুলের কথায় সহমত হয়ে রাজন বলেন, সামাজিক সম্প্রীতি মানুষের মঙ্গল করে। সকলের মধ্যে এই অনুভূতি থাকাটা অবশ্যই দরকার যে, তারা গোটা সিস্টেমের সমান ভাগীদার। বিশেষত, এমন একটা সময়, যখন সামনে এত বড় চ্যালেঞ্জ, তখন তো আমরা বিভাজনে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে থাকতে পারি না।
পাশাপাশি আলাপচারিতায় আস্থার আবহ তৈরি করতে আমেরিকায় যেমন কথা হচ্ছিল, সেভাবে ভারতকে দৈনিক ২০ লক্ষ করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষা করাতে হবে বলেও মনে করেন রাজন। বলেন, বিরাট জনসংখ্যার চ্যালেঞ্জ সামলাতে হলে ভারতকে ব্যাপক সংখ্যায় টেস্ট করিয়ে যেতে হবে।