কাঠমাণ্ডু : অশান্ত নেপালে আটকে পড়েছেন এ দেশের অনেক পর্যটক। তাঁদের উদ্ধারের জন্য কেউ কেউ সোশাল মিডিয়ায় আবেদন জানাচ্ছেন। এরকম এক ভারতীয় যুবতীর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যাতে পোখারায় তাঁকে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। তাঁর হোটেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। মারমুখী জনতার হাত থেকে কোনও রকমে রক্ষা পান তিনি।

ভিডিওয় ওই পর্যটক নিজের নাম জানিয়েছেন উপাস্থা গিল। ভলিবল টুর্নামেন্টেের জন্য তিনি নেপাল গিয়েছেন। টানা তিন দিন ধরে নেপালে অশান্তি চলতে থাকায়, তাঁকে উদ্ধারের জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন উপাস্থা। ভিডিওয়, গিলকে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে দেখা গেছে। তিনি জানিয়েছেন, এমনকী পর্যটকদেরও ছাড়ছে না আন্দোলনকারীরা। নিজের হোটেলের স্পা-তে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় হোটেলে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। তাঁকে দেখেই বিক্ষোভকারীরা লাঠি নিয়ে তাড়া করে। তাঁর সমস্ত জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উপাস্থা আরও বলেন, "পোখারায় আমি ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমি এখানে একটি ভলিবল লিগ আয়োজন করতে এসেছিলাম। যে হোটেলে আমি উঠেছিলাম সেটা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার সমস্ত লাগেজ, সমস্ত জিনিসপত্র, আমার ঘরে ছিল। পুরো হোটেলটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি স্পাতে ছিলাম। লোকজন খুব বড় বড় লাঠি নিয়ে আমার পিছনে দৌড়াচ্ছিল। জীবন বাঁচাতে খুব কষ্ট করে পালাতে পেরেছি।" 

এদিকে নেপালে আটকে পড়েছেন বঙ্গতনয়া বিনিতা মান্না। খড়গপুরের বিনিতা বিরাটনগর মেডিক্যাল কলেজের MBBS দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাঁর দাবি, ক্যাম্পাসে আটকে রয়েছেন প্রায় ১০০ জন ভারতীয় পড়ুয়া। সোশাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও, ইন্টারনেট ব্যবহারে সমস্যা হচ্ছে। বেশিরভাগ সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এই অবস্থায় দ্রুত দেশে ফিরতে ভারতীয় দূতাবাসের সহযোগিতা চান নেপালের ওই মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা।

নেপালের আঁচ পড়েছে ভারতে। বন্ধ বিহারের রক্সৌল সীমান্ত। ওপারে নেপালের বীরগঞ্জ। সকাল থেকে দলে দলে ফিরছেন ভারতীয় পর্যটকরা। কেউ হেঁটে, কেউ বাসে, কেউ আবার ঘোড়ার গাড়ি করে ভাড়া করে দেশে ফিরে আসছেন। ভারতের দিক থেকে নেপালে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। গতকাল বীরগঞ্জে অনেক সরকারি ভবনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। কার্ফু জারি করা হয়েছে। তার মধ্যেই তড়িঘড়ি ফিরে আসছেন ভারতীয়রা। সতর্কতা এপারেও। SSB-র তরফে ব্যাগপত্র তল্লাশি করে, পরিচয়পত্র পরীক্ষা করে ছাড়া হচ্ছে। নেপালের দিকেও সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ভারত থেকে শুধুমাত্র নেপালের নাগরিকদের ওপারে যেতে দেওয়া হচ্ছে।