কাঠমান্ডু:  উত্তাল নেপাল। সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসছে দেশের মানুষ। নেপালের কেপি শর্মা ওলি সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভ তো দানা বাঁধছিলই, এবার সেই আগুনে ঘি ঢেলেছে দেশে প্রায় সব সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত।আর তার জেরে বিক্ষোভ চরম মাত্রা নেয়। সরকার বিরোধি স্লোগান তুলে সংসদ ভবনের ভিতর হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশও তৎপর। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, প্রথমে লাঠিচার্জ ও পরে গুলি চলে। পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪  বিক্ষোভকারী। 

অগ্নিগর্ভ নেপালের বাণেশ্বরচক এলাকা। সম্প্রতি নেপালে ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স-সহ প্রায় সব ধরনের সোশাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারপরই আন্দোলন বিরাট আকার নিয়েছে। ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছে যুবসমাজের মধ্যে। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। প্রয়োগ করা হয়েছে কাঁদানে গ্যাসও। তবুও আটকানো যাচ্ছে না তরুণ প্রজন্মের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। রাজপথে উঠেছে স্লোগান। বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে নেপাল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঠমান্ডুতে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন।

এএফপি সূত্রে খবর, সোমবার সকাল ৯টায় কাঠমান্ডু শহরের প্রাণকেন্দ্রে শিক্ষার্থী এবং বিরাট সংখ্যক তরুণ প্রতিবাদকারীরা একত্রিত হন।  জাতীয় পতাকা উড়িয়ে, জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রদর্শণ শুরু হয়। নানা সরকারি বিধিনিষেধ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান তোলেন তাঁরা। সোমবার নিউ বানেশ্বরে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের গুলিতে বিক্ষোভকারীরা নিহত হন।  বহু জন আহতও হন। নিহত ব্যক্তিদের সকলের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।  

সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান একাধিক ব্যক্তি। আহত বহু বিক্ষোভকারীকে সিভিল হাসপাতাল, এভারেস্ট হাসপাতাল এবং আশেপাশের অন্যান্য চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে সংসদ প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে। পুলিশ জলকামান, কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করে। গুলিও চলে। স্থানীয় প্রশাসন কাঠমান্ডুর কিছু অংশে কারফিউ জারি করেছে। অন্যদিকে বিক্ষোভ নেপালের অন্যান্য প্রধান শহরগুলিতেও ছড়িয়ে পড়েছে। সে দেশের সরকার,  দেশব্যাপী ২৬টি প্ল্যাটফর্ম ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে। শুক্রবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। এই তালিকায় আছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স (পূর্বে টুইটার), ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, লিংকডইন, রেডিট এবং সহ বেশ কিছু মাধ্যম। সরকারি দুর্নীতি এবং সাম্প্রতিক কালে সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা জারির পর বিক্ষোভের পারদ চড়েছে।