নয়াদিল্লি: পাঠ্যবইয়ের খসড়ায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে ভুল তথ্য়। ইংরেজ শাসকের ভয়ে নেতাজি জার্মানি পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে উল্লেখ। সেই নিয়ে কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকারকে ঘিরে জোর বিতর্ক। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত পাঠ্যবই সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত বড় মিথ্যাচার বইয়ের খসড়ায় জায়গা পেল কী করে, কেন কারও নজর পড়ল না, উঠছে প্রশ্ন। (Netaji Subhas Chandra Bose)
কেরলের চতুর্থ শ্রেণির পরিবেশ বিজ্ঞান বইয়ের খসড়ায় নেতাজি সম্পর্কে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। ‘টিচার্স হ্যান্ডবুক’ হিসেবে বইটি সামনে আনা হয়, যাতে বলা হয়, ‘ইংরেজদের ভয়ে জার্মানি পালিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু’। ওই বই তৈরির দায়িত্বে ছিল কেরল স্টেট কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং। (Kerala Textbook on Netaji)
বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। এতেই তড়িঘড়ি সাফাই দেয় কেরল শিক্ষা দফতর। বলা হয়, বইয়ের খসড়ায় সংশোধন ঘটানো হয়েছে। পাঠ্যবই তৈরির কমিটিতে যাঁরা ছিলেন, আপাতত শিক্ষা সংক্রান্ত কাজকর্ম থেকে বিরত রাখা হয়েছে তাঁদের। কেরলের শিক্ষামন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা ভি শিবকুট্টি বলেন, “পাঠ্যবইয়ের খসড়ায় কিছু ঐতিহাসিক ভুল ধরা পড়েছে। বিষয়টি সামনে আসতেই সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়। সংশোধিত বই-ই যাতে প্রকাশিত হয়, নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে কেন্দ্র যেভাবে ইতিহাস বিকৃত করে, কেরল সরকার সেই ধারণায় বিশ্বাসী নয়। ওই পাঠ্যবই কমিটিতে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের শিক্ষা সংক্রান্ত কাজ থেকে দূরে রাখতে বলা হয়েছে।”
যদিও এতেই বিতর্ক থামছে না। নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্রকুমার বসু সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘ইংরেজদের ভয়ে নেতাজি বিদেশে পালিয়েছিলেন বলে যে মিথ্যে দাবি করা হয়েছে, তা ক্ষমার অযোগ্য। INA-ই শেষ যুদ্ধ লড়েছিল’। ওই পাঠ্যবই সম্পাদনার কাজে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা উচিত বলেও মত তাঁর।
বিজেপি-র অভিভাবক সংস্থা RSS-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দাবি, “কেরলের পড়ুয়াদের বিকৃত ইতিহাস পড়াতে চায় কেরলের সিপিএম সরকার। ওই একই বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যাযে অসম এবং ঝাড়খণ্ডের নাম মানচিত্র থেকে গায়েব রয়েছে। এর নেপথ্যে সিপিএম-এর সুপ্ত রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে। দেশের অখণ্ডতা নষ্ট করাই লক্ষ্য ওদের। আসলে চিনের কমিউনিস্ট পার্টি অসম যে অসম আক্রমণের ভাবনাকে সমর্থন করে ওরা।”