মথুরা: মথুরায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমি--- এই দাবি করে আদালতে নতুন করে আবেদন করা হয়েছে। মথুরার দেওয়ানি আদালতে ওই আবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৬৮ সালে শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান সেবা সংস্থা এবং মুসলিম পক্ষের মধ্যে সমঝোতাকে খারিজ করে শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমিতে একটি শাহি মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। ওই মসজিদ ওই জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক।


আবেদনটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমান এবং স্থানটি শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি নামে দায়ের করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মথুরার কাটরা কেশব দেবের ১৩৩.৩৭ একর জমি থেকে শাহি ইদগাহ ট্রাস্ট ২ বিঘা জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করেছে। সেখানে একটি মসজিদ নির্মিত হয়েছে। ওই জায়গাটিই শ্রীকৃষ্ণের প্রকৃত জন্মভূমি।

ঔরঙ্গজেব মন্দিরের পরিবর্তে মসজিদ বানিয়েছিলেন

ওই আবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক হাজার বছর ধরে বহু রাজা শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমিতে মন্দির তৈরি করেছেন অথবা পুরনো মন্দিরের সংস্কার করেছেন। ১৬১৬ সালে ওরচার রাজা বীর সিংহদেব বুন্দেলা ৩৩ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ওই জায়গায় মন্দির বানিয়েছিলেন। ১৬৫৮ সালে ঔরঙ্গজেব দিল্লির বাদশা হন এবং হিন্দু মন্দির ও ধর্মস্থানগুলি ধ্বংসের নির্দেশ দেন। আদালতে জমা দেওয়া ওই আবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৬৭০ সালের জানুয়ারিতে মোগলবাহিনী মথুরা আক্রমণ করে এবং মন্দিরের বিশাল অংশ ভেঙে দিয়ে মসজিদ নির্মাণ করে। মন্দিরের মূর্তিগুলি আগ্রা নিয়ে গিয়ে বেগম শাহি মসজিদের সিঁড়ির নীচে পুঁতে দেওয়া হয়। এই সব তথ্য মোগল জমানার বিভিন্ন নথিপত্রে লিপিবদ্ধ রয়েছে। মোগল দরবারে কর্মচারীদের নথিপত্রেও এই সব ঘটনা লেখা রয়েছে।

মরাঠা যোদ্ধারা মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করেছিলেন

যুদ্ধে জয়ের পরে মরাঠারা ১৭৭০ সালে আগ্রা এবং মথুরা দখল করে। মসজিদটি সরিয়ে সেখানে মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করেন। ১৮০৩ সালে ব্রিটিশরা পুরো অঞ্চলটি দখল করে নেয়। ১৮১৫ সালে জমি নিলাম হয়েছিল এবং বেনারসের রাজা পাটনি মল পুরো জমিটি কিনেছিল। এর পরে, মুসলমানরা রাজা পাটনি মল এবং তাঁর বংশধরদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা করেছিল। প্রতিবারই তার মামলা খারিজ করা হয়েছিল।

ওই আবেদনে বলা হয়েছে, জমির আসল অধিকার কেবল শ্রীকৃষ্ণের। এই পিটিশন কেবল তাঁর নামে দায়ের করা হচ্ছে। অযোধ্যায় রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার রায় সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণার পরেই মথুরায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমি নিয়ে দাবি জোরদার হতে শুরু করেছে। এই দাবি নিয়ে নতুন করে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।