নয়াদিল্লি: দুই দিকে খাড়া পাহাড়, আর মধ্যিখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে নদী। মন ভোলানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যেই কোটি কোটি টাকা খরচ করে সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। তিব্বতের সঙ্গে চিনের মূল ভূখণ্ডকে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল ওই সেতুর মাধ্যমে। কিন্তু উদ্বোধনের কয়েক মাস পরই ভেঙে পড়ল সেই সেতুর একাংশ। প্রথমে তীব্র শব্দ, আর তার পরই কার্যত ধসে গেল সেতু একাংশ। ধুলোয় ঢেকে গেল চারিদিক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সেই মুহূর্তের ভিডিও। (China Hongqi Bridge Collapse)
চিনের সিচুয়ান প্রদেশের মেরক্যাংয়ে জাতীয় সড়ক G317-এর অংশ ছিল Hongqi Bridge. ৭৫৮ মিটার দীর্ঘ ওই সেতুর মাধ্য়মেই তিব্বত মালভূমির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল চিনের মূল ভূখণ্ড। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেল ৪টে নাগাদ সেতুর একাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। তবে পাহাড়ের গায়ে, পাহাড়ি রাস্তার এদিক ওদিক ফাটল ধরতে দেখে আগেই বিপদ বোঝা গিয়েছিল। তাই সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। যে কারণে এত বড় বিপর্যয় ঘটলেও, প্রাণহানির কোনও খবর নেই। (China News)
চলতি বছরের শুরুতেই Hongqi সেতুর নির্মাণকার্য সম্পূর্ণ হয়। এক বছরও হয়নি সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল সেতুটি। তার মধ্যেই এত বড় বিপর্যয় ঘটল কী করে? এর জন্য পার্বত্য অঞ্চলের পরিবেশকেই দায়ী করছে স্থানীয় প্রশাসন। বলা হয়েছে, ওই পার্বত্য এলাকার মাটি নড়বড়ে। জায়গায় জায়গায় ধস নামতে শুরু করেছে। ফলে সেতুটির ভার ধরে রাখতে পারছে না।
এর আগে, গত অগাস্ট মাসে চিংহাই প্রদেশে একটি রেল সেতু ভেঙে পড়ে, যাতে ১২ জন মারা যান। খোঁজ মেলেনি চার জনের। আর তার পরই এত বড় সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ল। চিনের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এ নিয়ে সরব হয়েছেন দেশের নাগরিকরা। নির্মাণে খামতি থাকলে, তা জানানো জরুরি যেমন, তেমনই অত বড় সেতু নির্মাণের আগে ভৌগলিক পরিবেশ খতিয়ে দেখানো হল না কেন, প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
এই সেতু বিপর্যয় নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে চিনে। সংবাদ সংস্থা Bakram Emergency Management Bureau জানিয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিক এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল ওই অঞ্চলে। সেতুটি তৈরি করেছিল Sichuan Road and Bridge Group. ভেঙে পড়ার অংশের পুনর্নির্মাণ বা পুনরায় সেতুটি চালু করা নিয়ে কিছু জানায়নি তারা।