আবীর দত্ত, কলকাতা: রাজ্যে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের অভিযোগ নিয়ে এর আগে রাজ্যে চরম রাজনৈতিক তরজা হয়েছিল। এবার ওই বিষয়টি নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করা হল এনআইএ (NIA)-এর তরফে। চার্জশিটে এনআইএ দাবি করেছে মানবপাচার চক্রের হাত ধরে মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা এই রাজ্যে প্রবেশ করছে।
পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক টানাপড়েন চলে সবসময়। সেই আবহেই বিস্ফোরক দাবি করল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ। পাচারচক্রের হাত ধরে পশ্চিমবঙ্গেও ঢুকে পড়ছে রোহিঙ্গারা। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তকে ব্যবহার করে রমরমিয়ে মানবপাচার চলছে বলে দাবি করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পাশাপাশি, মানবপাচার চক্রের এমন ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে এনআইএ।
সম্প্রতি অসমের এনআইএ কোর্টে পেশ করা হয়েছে ওই চার্জশিট। সেখানে দাবি করা হয়েছে, ভুয়ো পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ভারতে ঢুকে পড়ছে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গারা। অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও জম্মু-কাশ্মীরে অভিযান চালিয়ে ২৯ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর ভুয়ো নথি, ব্যাঙ্কের নথি এবং ডিজিটাল ডিভাইস। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় রুজু করা হয়েছে মামলা। ফরেনার্স অ্যাক্ট, পাসপোর্ট অ্যাক্ট ও পাসপোর্ট রুল ১৯৫০-এর ভিত্তিতে দায়ের করা হয়েছে মামলা।
এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ১৯৬৭ সালের পাসপোর্ট আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করেছিল অসম পুলিশ। তদন্তের সূত্র ধরে এরপর একে একে উঠে আসতে শুরু করে নানা তথ্য। মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা ভারতে প্রবেশ করছে বলে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। ত্রিপুরা, অসমের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত দিয়েও অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে ঢুকে পড়ছে বলে সামনে আসে তথ্য। এরপরই নড়েচড়ে বসে এনআইএ। মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রের এই তদন্তকারী সংস্থা। সেই মামলাতেই এবার চার্জশিট পেশ করল তারা।
এর আগেও আদালতে NIA দাবি করেছিল, রোহিঙ্গাদের ভারতে ঢুকিয়ে জঙ্গি কার্যকলাপে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর আগে গত নভেম্বরে এই তদন্তে বাংলা-সহ ১১টি রাজ্যে তল্লাশি চালিয়েছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই সময় মানব পাচারের মামলায় রাজস্থান, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, ত্রিপুরা, অসমের সঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গেও উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কিছু জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিলে NIA. বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল সেইবার। NIA-এর দাবি ছিল, বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢোকানো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। তারপর বিভিন্ন জায়গায় ঘর ভাড়া নিয়ে তাঁদের রাখা হচ্ছে। তারপর বিভিন্ন জাল নথি তৈরি করে ভারতের নানা জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। এই পুরো প্রক্রিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি জড়িয়ে রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছিল।