চণ্ডীগড় : মহারাষ্ট্র, কর্ণাটকের পর এবার নাইট কার্ফুর রাস্তায় হাঁটল হরিয়ানা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ জানিয়েছেন, সোমবার রাত থেকেই জারি হবে এই বিধিনিষেধ। পরবর্তী নির্দেশিকা না পাওয়া পর্যন্ত রাজ্যে জারি থাকবে এই বিধি। এদিনই দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ১৬টি রাজ্যের নাম নেয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সেখানে হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশ,তামিলনাড়ু, পঞ্জাব,কেরল, তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড়, উত্তরপ্রদেশ,দিল্লি, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের নাম রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, দেশের মধ্যে এইসব রাজ্যে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে করোনা ভাইরাস।


সকালে এই মন্তব্যের পরই নাইট কারফিউ ঘোষণা করেছে হরিয়ানা সরকার। রাজ্যের করোনা পরিসংখ্যান বলছে, শুধু রবিবারই রাজ্যে ১৬ জন করোনা নিয়ে মারা গিয়েছেন। যার ফলে হরিয়ানায় করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩,২৬৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪৪০ জন। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩,১৬,৮৮১ জন। যা স্বাভাবিকভাবেই কপালে ভাঁজ ফেলেছে স্বাস্থ্য দফতরের।


নির্দেশিকা অনুযায়ী, 


১. নন-এসেনশিয়াল ব্য়ক্তি এবং গাড়ির চলাচল রাত নটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
২.  রাত নটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত পায়ে হেঁটে বা গাড়িতে কেউ বাড়ি ফিরতে পারবেন না, বেরোতে পারবেন না বা কোথাও ঘুরতে পারবেন না । 
৩. তবে ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের জন্য এই নিয়মের ছাড় রয়েছে। 
৪. সংবাদমাধ্যম, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং দমকল বিভাগের কর্মীরাও ছাড়ের আওতায়। 
৫. গর্ভবতী মহিলা এবং স্বাস্থ্যের কারণে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাচ্ছেন এমন ব্যক্তিরা ছাড় পাবেন। 
৬. এছাড়া অন্য কেউ রাতে বেরোতে চাইলে কার্ফু পাস নিতে হবে।
৭. আন্তঃরাজ্য বা রাজ্যের বাইরে যাতায়াতে কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। 
৮. কার্ফু চলাকালীন হাসপাতাল, ওষুধের দোকান এবং এটিএম খোলা থাকবে। 


এদিকে, দেশের করোনা বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৬০ লক্ষ ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট জানাচ্ছে, দেশে নতুন কোভিড পজিটিভের সংখ্যা ১,৬৮,৯১২ জন। এখনও পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁয়েছে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ ২৭ হাজার ৭১৭ জন।গত এক সপ্তাহে দেশে ১০ লক্ষ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছে যা মোটেই স্বস্তির খবর নয়। টানা ৬দিন দেশে ১লক্ষের বেশি করোনা কেস পাওয়া গেছে। একদিনে মারা গিয়েছেন ৯০৪জন।


সবথেকে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রের। সেখানে ফুল লকডাউনের পথে হাঁটতে পারে উদ্বব ঠাকরের সরকার। ইতিমধ্যেই সেখান 'নাইট কার্ফু' ও 'উইকেন্ড লকডাউন' চালু হয়েছে। মহারাষ্ট্রে পূর্ণ লকডাউনের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এ বিষয়ে সর্বদলীয় বৈঠকও করেছেন তিনি।
তবে মহারাষ্ট্রের পূর্ণ লকডাউনের রাস্তায় হাঁটতে রাজি নয় দিল্লি।


মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, করোনা রুখতে লকডাউন কোনও সমাধান হতে পারে না। উল্টে সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। খুব প্রয়োজন ছাড়া দিল্লিবাসীকে রাস্তায় বেরোতে নিষেধ করছেন তিনি। এমনকী করোনা আক্রান্ত হলেই হাসপাতালে ছুটতে না করেছেন রোগীদের। সিরিয়াস কেস না হলে 'হোম আইসোলেশন'-এর দাওয়াই দিয়েছেন তিনি।