নয়াদিল্লি: নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ব্যবসায়ী, শিল্প সংস্থাগুলির কাছ থেকে জোর করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ। আদালতের নির্দেশে FIR দায়ের দয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বিরুদ্ধে। তবে একা সীতারামনের বিরুদ্ধেই FIR দায়ের হয়নি, FIR-এ নাম রয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন BJP সরকারের একাধিক নেতা, এমনকি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) আধিকারিকদেরও। (Nirmala Sitharaman)
বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালতের নির্দেশে সীতারামন এবং বাকিদের বিরুদ্ধে তিলকনগর থানায় FIR দায়ের হয়েছে। FIR-এ নাম রয়েছে BJP-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, কর্নাটকে দলের সভাপতি বি ওয়াই বিজয়েন্দ্র, BJP নেতা নলিনকুমার কাতিল এবং ED-র বেশ কয়েকজন আধিকারিকের, যাঁদের নাম গোপন রাখা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮৪ (তোলাবাজি), ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) এবং ৩৪ (বিশেষ উদ্দেশ্যপূরণের লক্ষ্যে কার্যসাধন)। (Electoral Bonds)
'জনাধিকার সংঘর্ষ সগঠনে'র আদর্শ আইয়ারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি আদালতে ওঠে। এ বছর এপ্রিল মাসে নির্মলা এবং বাকিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। আদর্শের দাবি, ২০১৯ এবং ২০২২ সালে এক ব্যবসায়ীর সংস্থা থেকে মোটা আদায় দায়ের করা হয়। এক ওষুধ প্রস্তুত সংস্থাকেও বাধ্য করা হয় মোটা টাকা চাঁদা দিতে। আদর্শ জানান, প্রভাবশালী অনেকে এই জুলুমবাজির সঙ্গে যুক্ত। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং আয়কর দফতরের অপব্যবহার করেছেন নির্মলা। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে দলের সিন্দুক ভরেছেন তিনি। SBI প্রকাশিত নথিপত্র থেকে আরও অনিয়ম সামনে এসেছে বলেও দাবি করেন আদর্শ।
আদর্শ জানিয়েছেন, ED-র সহযোগিতায় Vedanta, Sterlite, Aurobindo Pharma-র মতো সংস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করেন নির্মলা, যাতে তারা ৮০০০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের নির্বাচনী বন্ড কেনে। এর মধ্যে Aurobindo Pharma-র ডিরেক্টর পি শরৎচন্দ্র রেড্ডিকে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করে ED. শরৎ গ্রেফতার হওয়ার পর Aurobindo Pharma ২৫ কোটি টাকা মূল্যের নির্বাচনী বন্ড কেনে, যে টাকা BJP-র অ্যাকাউন্টে ঢোকে। এর পর, ২০২৩ সালে সরকারের হয়ে সাক্ষ্য দিতে রাজি হয় Aurobindo Pharma, আর তাতেই স্বাস্থ্যজনিত কারণ দেখিয়ে জামিনে মুক্তি পেয়ে যান শরৎ।
অভিযোগে বলা হয়েছে, নির্বাচনী বন্ডের নামে আসলে তোলাবাজি চক্র চলছিল। বিভিন্ন স্তরে BJP নেতারা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বেআইনি ভাবে টাকা তোলেন দলের নেতারা। পরে নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। BJP যদিও অভিযোগ অস্বীকার করছে। দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছেন বলে দাবি তাদের। সিদ্দারামাইয়ার পদত্যাগও দাবি করছে তারা। এর পাল্টা, সীতারামনের পদত্যাগ দাবি করেছেন সিদ্দারামাইয়া। নির্মলার পদত্যাগ দাবি তরেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও।
তবে যে আবগারি দুর্নীতি মামলার নাম উঠে এসেছে এ প্রসঙ্গে, সেই মামলায় দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তাঁর তদানীন্তন সরকারের নেতা-মন্ত্রীদেরও গ্রেফতার করা হয়। সেই সময়ই Aurobindo Pharma-র সঙ্গে BJP-র যোগসাজশ নিয়ে সরব হয় আম আদমি পার্টি। কেজরিওয়াল খোদ অভিযোগ তোলেন যে, Aurobindo Pharma সংস্থার ডিরেক্টর শরৎ নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিজেপি-কে ৫০ কোটির বেশি চাঁদা দিয়েছেন। চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে তাঁকে। সেই সংক্রান্ত প্রমাণও তাঁর কাছে রয়েছে বলে জানান।