শিমলা : প্রবল বৃষ্টিপাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে রাজ্যের বিস্তীর্ণ অংশ। এহেন বিপর্যয়ের মোকাবিলায় তাঁর সক্রিয় নেতৃত্ব প্রশংসাযোগ্য। হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) মুখ্যমন্ত্রী ঠাকুর সুখবিন্দর সিং সুখুর (Sukhvinder Singh Sukhu) উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করল নীতি আয়োগ (NITI Aayog)। সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান সুমন কে. বেরি চিঠি লিখে তাঁকে প্রশংসা করেছেন। ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন বেরি।
চিঠিতে নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্য়ান লিখেছেন, 'অসহায় মানুষগুলোর কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিয়ে প্রশংসনীয় কাজ করেছে হিমাচল প্রদেশ সরকার, বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নীতি আয়োগও হিমাচলকে সম্ভাব্য সমস্ত রকমের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এই রাজ্যের ধ্বংসাত্মক অবস্থা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। নিঃসন্দেহে এটি কৃষি, জীবনযাত্রা এবং পরিকাঠামোয় প্রভাব ফেলেছে।'
কঠিন এই পরিস্থিতিতে হিমাচলের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে নীতি আয়োগ। মুখ্যমন্ত্রী ঠাকুর সুখবিন্দর সিং সুখুও পাল্টা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে। তিনি বলেন, "এই ধরনের স্বীকৃতি ত্রাণ ও উদ্ধার কার্য এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। চলতি বর্ষায় ১২ হাজার কোটির বেশি টাকার ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সাহায্য করার সমস্ত চেষ্টা চলছে। রাজ্যের মানুষের সামগ্রিক প্রচেষ্টায় আমরা আবার মাথা তুলে দাঁড়াব।"
এবার জুনের ২৪ তারিখে পাহাড়ি এই রাজ্যে বর্ষা আগমনের কথা জানায় আবহাওয়া দফতর। ভারী বর্ষণ, মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে শুরু হয় ধস, বন্যা। তাতে একাধিক পরিকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। তার জেরে, সরকার গোটা রাজ্যকে 'প্রাকৃতিক-বিপর্যয়ে' ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা বলে ঘোষণা করে। পাশাপাশি কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানায়, ২০০৫ বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করার।
বৃষ্টি-বিধ্বস্ত এই রাজ্যে হাজার হাজার মানুষের রুটিরুজি নষ্টের পথে। বহু মানুষের ব্যবসাপত্র শিকেয় উঠেছে। এই রাজ্যের অর্থনীতির অন্যতম ভিত পর্যটন ও আপেল। সেখানেও আঘাত করেছে বৃষ্টি-বিপর্যয়। একসময় এখানে যে ট্যাক্সি চালক দিনে ২ হাজার টাকা করে রোজগার করতেন, সেখানে এখন তাঁদের দৈনিক আয় নেমে এসেছে ২০০ টাকায়।
সরকারি তরফে দাবি করা হয়েছে, হাজারো হাজারো বাসস্থান তছনছ হয়ে গিয়েছে। বিপুল পরিমাণ শস্য ও খেত নষ্ট হয়েছে। ভারতীয় বায়ুসেনা, সেনা, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, পুলিশ, হোমগার্ড, দমকলকর্মী এবং স্থানীয় ভলান্টিয়ারদের সাহায্য়ে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করতে হয়েছে। জাতীয় সড়ক থেকে শুরু করে রাজ্য, জেলা এবং স্থানীয় স্তরে রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বহু সেতু হয় ধুয়েমুছে সাফ বা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত যে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এই বিপর্যয়ের জেরে গোটা রাজ্যকে এমন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে যাতে কি না দৈনিক জীবনযাপন ধাক্কা খেয়েছে, জানিয়েছে রাজ্য সরকার।