নাগপুর: পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের ঢের আগে থেকেই ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি শুরু হয়ে গিয়েছে। আর সেই আবহেই দিল্লি থেকে কড়া বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি-র বর্ষীয়ান নেতা নিতিন গড়কড়ীর। তাঁর সাফ বক্তব্য, "জো করেগা জাত কি বাত, উসে কস কে মারুঙ্গা লাথ" (যে জাত নিয়ে কথা বলবে, তাকে কষিয়ে লাথি মারব)। নির্বাচনে যদি হারতেও, হয় তাও নিজের নীতিবোধ থেকে সরবেন না বলে জানালেন নিতিন। (Nitin Gadkari)
শনিবার মহারাষ্ট্রের নাগপুরে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন নিতিন। সেখানে তিনি জানান, জাত, ধর্মের নিরিখে রাজনীতিতে তীব্র আপত্তি রয়েছে তাঁর। চারিত্রিক গুণই মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ গড়ে তোলে, জাত, ধর্ম, ভাষা, লিঙ্গ নয়। নির্বাচনে যদি হারতেও হয় তিনি কখনও জাত বা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করবেন না বলে জানান কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে মন্ত্রী। (Maharashtra News)
এ প্রসঙ্গে ২০২৪ সালের একটি ঘটনার উল্লেখ করেন নিতিন। জানান, একটি সমাবেশে ৫০ হাজার লোক হয়েছিল। সেখানেও জাতের কথা ওঠে। সেখানে তিনি সাফ বলেন, "যে জাত নিয়ে কথা বলবে, তাকে কষিয়ে লাথি মারব।" ভারতীয় রাজনীতিতের গভীরে জাতপাত গভীরে প্রোথিত বলে যদিো মেনে নেন নিতিন। কিন্তু নিজের রাজনীতিতে সেসবের প্রভাব পড়তে দিতে চান না নিতিন। তাঁর কথায়, "আমি রাজনীতি করি। এখানে এসব চলে। কিন্তু আমি কখনও অংশ নিই না, তাতে ভোট মিলুক বা না মিলুক।"
নিতিন জানিয়েছেন, বন্ধুরা তাঁকে এই ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। রাজনৈতিক ভবিষ্যতে প্রভাব পড়তে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু তাঁর কথায়, "আমি একটুও ভাবিত নই। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার অর্থ জীবনে হেরে যাওয়া নয়। আমি আমার মূল্যবোধ থেকে একচুল সরব না। জাত, ধর্ম, ভাষা, লিঙ্গ কোনও মানুষের পরিচয় হতে পারে না। চরিত্র দিয়েই মানুষ চেনা যায়। তাই এই সবকিছুর নিরিখে মানুষের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করব না আমরা।"
শুধু মাত্র স্কুল-কলেজের ডিগ্রি অর্জন করলেই শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না বলে মত নিতিনের। তাঁর কথায়, "শিক্ষার অর্থ ডিগ্রি অর্জন নয়। সমাজ ও দেশের কল্যাণের প্রশ্ন জড়িয়ে। জ্ঞানই আসল শক্তি, সেই শক্তি অর্জন করাই লক্ষ্য হওয়া উচিত।" নিতিন জানান, ১৯৭৫ সালে যখন একাদশ শ্রেণির ছাত্র তিনি, সেই সময় জরুরি অবস্থা জারি হয়। তিনিও আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন, যার জেরে পড়াশোনার ক্ষতি হয়। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সুযোগ পাননি। তার পরও ১২টি সাম্মানিক ডিলিট পেয়েছেন। তবে নিজের নামের পাশে তিনি ডঃ লেখেন না বেল জানিয়েছেন নিতিন।