উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, দীপক ঘোষ ও ময়ুখঠাকুর চক্রবর্তী, নয়াদিল্লি: দোরগড়ায় লোকসভা ভোট (Lok Sabha Election 2024)। আর তার আগে বাংলায় চাকরির দাবিতে দিনের পর দিন রাস্তায় কাটাচ্ছেন আন্দোলনকারীর দল। একের পর এক পুজো গিয়েছে। গিয়েছে বারো মাসে তেরো পার্বণ। কিন্তু একই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাংলার চাকরি প্রার্থীরা। আর এই ইস্যুকে ঢাল করেই সরব বিরোধী দলগুলি। একদিকে যেমন লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলে কয়েকমাস আগে দিল্লি গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সদ্য বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার বৈঠক সেরে মোদির সঙ্গে এই ইস্যুগুলি নিয়ে বৈঠক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলাইবাহুল্য লোকসভা ভোটকে ঘিরে সবমিলিয়ে রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি রাজনৈতিক দলগুলিতে। যে যার রণকৌশল সাজাতে ব্যস্ত। আর এহেন সময়েই বিহারে মাস্টারস্ট্রোক নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar)।


আজ্ঞে হ্যাঁ, লোকসভা ভোটের মুখে বিহারে শিক্ষক নিয়ে মাস্টারস্ট্রোক নীতীশ কুমারের। প্রায় ৪ লক্ষ চুক্তিভিত্তিক শিক্ষককে সরকারি কর্মীর মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত।বিহার বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতির পরীক্ষায় পাস করলেই সরকারি কর্মীর তকমা। চুক্তিভিত্তিক শিক্ষককে সরকারি কর্মীর মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিহার মন্ত্রিসভার। মূলত দীর্ঘ আন্দোলনের জেরে, প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ চুক্তিভিত্তিক শিক্ষককে সরকারি কর্মীর মান্যতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বিহার সরকার। তবে তাঁর আগে পাস করতে হবে 'কমপিটেন্সি এগজামিনেশন'। যা সর্বোচ্চ দেওয়া যাবে তিনবার। নিয়োগ চেয়ে বাংলায় যখন যোগ্যপ্রার্থীদের রাস্তায় দিন কাটাতে হচ্ছে, তখন পড়শি রাজ্যে খুশির হাওয়া। 


চাকরির দাবিতে, বছরের বছর কেটে যাচ্ছে রাস্তায়। অপেক্ষা করতে করতে, কারও কারও চাকরির বয়সও পেরিয়ে গেছে। একদিকে, বাংলায় যখন হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর এই করুণ ছবি, তখন পড়শি রাজ্য় বিহারে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের সরকারি কর্মীর মর্যাদা সেই হারে বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল পড়শি রাজ্য বিহার! অর্থাৎ বাংলায় যখন হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী হকের চাকরিটাই পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। তখন বিহারে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের স্থায়ীকরণের দাবিকে মান্যতা দিল নীতীশ কুমারের সরকার। এই মুহূর্তে বিহারে ক্ষমতায় রয়েছে জেডিইউ-আরজেডি এবং কংগ্রেসের জোট। 


এই পড়শি রাজ্যে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক রয়েছেন। সরকারি কর্মীদের মতো মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দাবিতে, দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। বিহার সরকার নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, আন্দোলনে নামেন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা। এবার লোকসভা ভোটের আগে,চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের দাবিতে মান্য়তা দিল নীতীশ কুমারের মন্ত্রিসভা। 
আর এই ঘটনাকে হাতিয়ার করেই, নতুন করে সরব হয়েছে এরাজ্য়ের বিরোধীরা। 


আরও পড়ুন, 'পুরসভায় স্ত্রী ও ভাইয়ের চাকরি..', ED-র নজরে দক্ষিণ দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান


 সিপিএম রাজ্য সম্পাদক  মহম্মদ সেলিম বলেছেন,বিহারে সাড়ে তিন লাখ টিচার চাকরি পেলো। নীতিশ কুমার সরকার দেখিয়ে দিল সরকার চাইলে নিয়োগ করতে পারে। আর আমাদের রাজ্যে যারা চুরি করে জেলে থাকার কথা তারা মিটিং করছে। আর যারা যোগ্য  চাকরি প্রার্থী তাদের থানায় চোরদের সেলে রাখা হয়েছে। এই রাজ্যের অবস্থা। বাংলায় রাস্তায় চাকরিপ্রার্থীরা, বিহারে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের সরকারি কর্মীর মর্যাদা।বিহার সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের 'কমপিটেন্সি এগজামিনেশন' হবে। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে, তবেই সরকারি কর্মীর মর্যাদা মিলবে। তবে ততদিন পর্যন্ত আগের হারেই বেতন পাবেন সকলে। একজন পরীক্ষার্থী সর্বোচ্চ তিনবার 'কমপিটেন্সি এগজামিনেশন' দিতে পারবে।