নয়াদিল্লি: নৃশংসতায় ফের নজির গড়ল উত্তর কোরিয়া। এবার মারাত্মক অভিযোগ উঠল তাদের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, K-pop গান শোনার 'অপরাধে' প্রকাশ্যে এক তরুণের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে তারা। দক্ষিণ কোরিয়ার ঐক্য মন্ত্রকের তরফে উত্তর কোরিয়ায় মানবাধিকার কতটা সংরক্ষিত, সেই নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে, তাতেই এই দাবি করা হয়েছে। (North Korea News)


জানা গিয়েছে, প্রকাশ্যে দক্ষিণের হোয়াংহি এলাকার বাসিন্দা ২২ বছরের এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে উত্তর কোরিয়া। ওই তরুণের বিরুদ্ধে ৭০টি K-pop গান শোনা, দক্ষিণ কোরিয়ার তিনটি ছবি দেখা এবং অন্যদের তা দেখতে দেওয়ার অভিযোগ ছিল। সেই নিয়ে মামলা হলে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।  মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হয় তাঁকে। এর পরই প্রকাশ্যে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। (Human Rights Report)


২০২০ সালে দেশে একটি আইন চালু করে উত্তর কোরিয়া। 'প্রতিক্রিয়াশীল মতাদর্শ এবং সংস্কৃতি' নামের ওই আইেন সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় যে, দক্ষিণ কোরিয়ার তোনও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখা বা শোনা যাবে না উত্তর কোরিয়ায়। দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতিল অনুসরণ করা যাবে না। দেশবাসীকে পশ্চিমি সংস্কৃতির কুপ্রভাব থেকে রক্ষা করতেই এই আইন বলে জানায় দেশের সরকার। কিম জং-ইল প্রথম এই বিধিনিষেধ আনেন, পরবর্তীতে তাঁর ছেলে, দেশের বর্তমান শাসক কিম জং উন সেটিকে আরও কড়া ভাবে প্রয়োগ করেন। 


আরও পড়ুন: Donald Trump-Melania Trump: ফের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে, তার আগে স্ত্রীর সঙ্গে কেন গোপন 'চুক্তি' হল ট্রাম্পকে?


K-pop, K-drama, K-movie বলতে দক্ষিণ কোরিয়ায় নির্মিত গান, টিভি সিরিয়াল এবং সিনেমাকে বোঝায়। পৃথিবীর সর্বত্রই সেখানকার অনুষ্ঠানগুলি বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু উত্তর কোরিয়ায় পড়শি দেশের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখা বা শোনার অধিকার নেই। তাই ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয় বলে খবর। সংবাদমাধ্যমে বিদ্রোহীদের বয়ান উঠে এসেছে তা হল, 'কেন এভাবে বাঁচতে হবে আমাদের? উত্তর কোরিয়ায় বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া ভাল'।


উত্তর কোরিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, তাতে উত্তর কোরিয়ার এমন ৬৪৯ জনের উল্লেখ মিলেছে, যাঁরা দেশের রক্তচক্ষুর শিকার হয়েছেন। জানা দিয়েছে, প্রায় রোজই নাগরিকদের মোবাইল খুঁটিয়ে দেখা হয়। ফোনে কাদের সঙ্গে কথা বলছেন, কোথায় কী কথা বলছেন, পশ্চিমি সংস্কৃতি অনুসরণ করছেন কি না, চলে নজরদারি। বিয়েতে সাদা পোশাক পরলে, স্বামী যদি স্ত্রীকে কোলে নেন, সানগ্লাস পরেন যদি কেউ, মদ্যপানে যদি ওয়াইন গ্লাস ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রেও কড়া শাস্তি প্রাপ্য। নিজের ইচ্ছেয় চুলও কাটতে পারেন না উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা। টাইট জিন্স, টি শার্ট, বা চুলে রং করার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ রয়েছে। দেশের প্রতি নাগরিকদের অনুগত্যের পরীক্ষাও নেওয়া হয়।