নয়াদিল্লি: ভয়াবহতার নিরিখে গাইসালকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। ৩৬ ঘণ্টা কেটে গেলেও, এখনও নিখোঁজ অনেকে। বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এখনও কাটেনি। এখনও পর্যন্ত ২৯৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ১ হাজারের কোটা (Coromandel Express Accident)। ইদানীং কালে এত ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা না ঘটলেও, গত এক বছরে ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনা ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মালগাড়ি দুর্ঘটনাও। কোথাও প্রাণহানি ঘটেছে, কোথাও আবার ঘটেনি (Odisha Train Accident)।
২০২২-'২৩ অর্থবর্ষে রেল দুর্ঘটনা ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে
এপ্রিল মাসে রেলের নিরাপত্তা নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক ছিল। সেখানে রেলমন্ত্রকের কাছে এই পরিসংখ্যান জমা পড়ে। ভারতীয় রেলের সব জোন মিলিয়ে ওই পরিসংখ্যান সামনে আনা হয় ৮ মে। তাতে দেখা গিয়েছে, ২০২২-'২৩ অর্থবর্ষে রেল দুর্ঘটনা ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মালগাড়ি-সহ তুলনামূলক ছোটখাটো দুর্ঘটনা যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান অনিল লাহোটি।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২-'২৩ অর্থবর্ষে ৪৮টি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। তার আগের অর্থবর্ষে এই সংখ্যাটি ছিল ৩৫। তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হল, ২০২২-'২৩ অর্থবর্ষে যে ৪৮টি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে, তার মধ্যে ৩৫টিই ঘটে সিগনাল সংক্রান্ত সমস্যার জেরে। বালেশ্বর দুর্ঘটনার নেপথ্যেও সিগনাল এবং পয়েন্টের বিভ্রাটের তত্ত্ব সামনে এসেছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর দাবি, ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেম বদলানোর ফলেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনার পর সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দফতর থেকে শনিবারই রেলের উন্নয়নে কী কী কাজ হয়েছে, তার খতিয়ান তুলে ধরা হয়। রেলের অধুনিকীকরণ, নিরাপত্তা প্রযুক্তি সংক্রান্ত লম্বা খতিয়ান সামনে আনা হয়। প্রধানমন্ত্রী নিজেও পরিকাঠামো পরিবর্তে দোষী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার কথা বলেছেন।
বালেশ্বর দুর্ঘটনার কারণ ঘিরে ধন্দ, প্রশ্ন পরিকাঠামো নিয়ে
যদিও সরকারি খরচ-খরচার হিসেব রাখে যে সংস্থা, সেই Comptroller and Auditor General of India (CAG)-এর গত বছরের রিপোর্ট অন্য কথা বলছে। তাতে বলা বয়, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট ২১৭টি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১৬৩টি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেই বেলাইন হয়ে যায় ট্রেন, যা মোট দুর্ঘটনার ৭৫ শতাংশ। অর্থাৎ পরিকাঠামো নিয়েই থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন।