বালেশ্বর: ওড়িশার বালেশ্বর পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাচ্ছেন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে। ওড়িশা সরকারের পক্ষ থেকে কনভয়ে করে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঘটনাস্থলে। জানা গিয়েছে, বাহানাগা হাই স্কুলে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই এই ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহদের দেহ রাখা হয়েছে। নিখোঁজ পরিজনদের খোঁজে এই স্কুলেই বিভিন্ন রাজ্য থেকে হাজির হয়েছেন বাসিন্দারা। এর পাশাপাশি হাসপাতালেও যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'মেদিনীপুর থেকে মেডিক্যাল টিম এসেছে ওড়িশায়। দুর্ঘটনার পিছনের নিশ্চয় কিছু রয়েছে। ভাল করে দুর্ঘটনার তদন্ত হোক।' রেলমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েই এদিন রেলের সমালোচনা করেছেন তিনি। এর পাশাপাশি জানিয়েছেন, মেদিনীপুর থেকে মেডিক্যাল টিম এসেছে ওড়িশায়। আজ বাংলা থেকে ৭০টি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছে। গতকাল পাঠানো হয়েছিল ৪০টি। ৪০ জন চিকিৎসকও রয়েছেন দুর্ঘটনাস্থলে। রয়েছেন সিস্টাররাও।


মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের রাজ্যে ফেরানোর জন্য পাঠানো হচ্ছে বাস। মেদিনীপুর থেকে এসেছেন ৫০ জন্য অফিসারদের একটি টিম। এই রাজ্যের যাঁরা ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন, তাঁদের ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য প্রদানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেল, ওড়িশা সরকার এবং কেন্দ্রের সঙ্গে সহায়তা করে যতক্ষণ পর্যন্ত না উদ্ধারকাজ শেষ হয় ততক্ষণ কাজ করবে এই রাজ্যও, একথাও বলেছেন তিনি। এছাড়াও সমস্যায় পড়লে হেল্পলাইনে ফোন করার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি আহতদের ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য প্রদানের কথাও বলেছেন তিনি। কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থাও থাকছে আহতদের জন্য। মৃতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বালেশ্বরের সোরো হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন তিনি। সঙ্গে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। অন্যদিকে হাওড়া স্টেশনের ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের নিয়ে এসেছে একটি বিশেষ ট্রেন। 


২ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় ওড়িশার বালাসোর জেলার কাছে বাহানাগা স্টেশনে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে তিনটি ট্রেন। লাইনচ্যুত হয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৫টি বগি। এছাড়াও হাওড়া-বেঙ্গালুরু সুপারফাস্টের ৩-৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। একটি মালগাড়ির কয়েকটি কামরাও লাইনচ্যুত হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৬১, আহত বহু। মৃত এবং আহত দুইয়ের সংখ্যাই বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। গ্যাস কাটার দিয়ে ট্রেনের কামরা কেটে দেহ উদ্ধারের চেষ্টা চলানো হচ্ছে। রেললাইনের উপর কার্যত খেলনা গাড়ির মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রেলের বগি। চারদিকে ছড়িয়ে রয়েছে মৃতদেহ। 


২০০৯ সালের পর ২০২৩- ১৪ বছর পর ফিরল ভয়াবহ স্মৃতি। তবে এবার আতঙ্ক আরও বেশি। ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাও অনেক বেশি। ২০০৯ সালে লাইনচ্যুত হয়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৩টি বগি। হাওড়া থেকে চেন্নাইগামী ট্রেনের দুর্ঘটয়ায় মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ১৬ জনের। আহত হয়েছিলেন প্রায় ১৬১ জন। এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল ২০০৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি। ওড়িশার জজপুর জেলায় লাইন পরিবর্তন করার সময় লাইনচ্যুত হয়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৩টি বগি। 


আরও পড়ুন- ডায়াবেটিস? খাওয়ার পরে এই চা এক কাপ খেলেই মুশকিল আসান!