পুরী: পুরুষ বন্ধুকে বেঁধে রেখে তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ। গোপালপুর সমুদ্রসৈকতে তরুণীর উপর নারকীয় অত্যাচার চালানো হয় বলে খবর। ওড়িশার গঞ্জম থেকে মারাত্মক অভিযোগ সামনে এল এবার। এই ঘটনায় বেশ কয়েক জনটে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঠিক কতজন জড়িত ছিল অপরাধে, এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি। (Odisha News)

রবিবার এই সন্ধেয় ঘটে বলে জানা যাচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজা উৎসবে যোগ দিতে গোপালপুর সমুদ্র সৈকতে গিয়েছিলেন ওই তরুণী ও তাঁর পুরুষ বন্ধু। একটি ফাঁকা জায়গায় বসে গল্প করছিলেন তাঁরা। সেই সময় তিনটি মোটর সাইকেলে চেপে প্রায় ১০ জনের একটি দল চড়াও হয় তাঁদের উপর। এর পর নারকীয় অত্যাচার শুরু হয়। (Gopalpur Sea Beach)

নির্যাতিতা জানিয়েছেন, প্রথমে তাঁদের ছবি তুলতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। অনলাইন মাধ্যমে ছবি ছেড়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয়। যুগলের কাছ থেকে টাকাও দাবি করা হয়। সাকুল্যে ১০০০ টাকাই ছিল তাঁদের কাছে। কিন্তু UPI-এর মাধ্যমে আরও টাকা দিতে বাধ্য করা হয়।  এর পর তাঁর পুরুষ বন্ধুর উপর চড়াও হয় সকলে। তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় প্রথমে। বেঁধে ফেলা হয় তাঁকে। এর পর ওই তরুণীকে টানতে টানতে সমুদ্র সৈকতের উপরই একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয়।

অপরাধ ঘটিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। এর পর ওই তরুণী ও তাঁর পুরুষ বন্ধু গোপালপুর থানায় পৌঁছন। গোটা ঘটনা পুলিশকে জানান তাঁরা। দু’জনের মুখ থেকে বৃত্তান্ত শুনে অপরাধস্থলে পৌঁছয় পুলিশের একটি দল। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। পুলিশের এসপি শঅরবণ বিবেক এম বলেন, “এখনও পর্যন্ত আটজনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় তাদের যোগ পাওয়া গিয়েছে। আটক হওয়া সকলেই প্রাপ্তবয়স্ক। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরও লোক যুক্ত থাকতে পারে।”

নির্যাতিতা এবং অভিযুক্তদের ডাক্তারি পরীক্ষা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমসূত্রে। নির্যাতিতার অবস্থা এই মুহূর্তে স্থিতিশীল। অধরাদের ধরতে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অনুচ্ছেদ ৭০-এর আওতায় একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ওই মামলায় গণধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০ বছরের বেশি সাজা হতে পারে। এই ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।

এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক সোফিয়া ফিরদৌস। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, 'গোপালপুর সমুদ্রসৈকতে ২০ বছরের পড়ুয়ার সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, তা ভয়াবহ। ১০ জন মিলে ওঁকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। বেঁধে রাখা হয়েছিল ওঁর পুরুষ বন্ধুকে। এটা শুধুমাত্র অপরাধ নয়, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরে ভেঙে পড়ার প্রমাণ। সরকার নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। সমুদ্রসৈকত যখন অপরাধস্থল হয়ে ওঠে, মহিলাদের যখন আতঙ্কে থাকতে হয়, বিজেপি সরকারকে এর দায় নিতে হবে। মহিলা হিসেবে আমি চুপ থাকব না। তদন্তে দেরি হওয়া চলবে না, কাউকে ক্ষমা করা যাবে না। অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। নির্যাতিতাকে বলব, আপনি একা নন। আমরা এই ঘটনা ভুলিয়ে দিতে দেব না'।