নয়াদিল্লি : বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও  লোকসভায় পেশ হল ‘এক দেশ, এক ভোট’ বিল।  বেলা ১২টা নাগাদ  সংসদে বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল। এই সংক্রান্ত দুটি বিল পেশ করেন আইনমন্ত্রী। বিল পেশ হতেই উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের নিম্নকক্ষ। প্রতিটি বিরোধী দলই বিলের বিরোধিতা দেখায়। বিলের বিরোধিতা করে সমাজবাদী পার্টি, কংগ্রেস, তৃণমূল।  ‘ইন্ডিয়া’র অন্য দলগুলিও আপত্তি জানায়।  


মঙ্গলবার বিল পেশের দিন লোকসভায় দলের সাংসদদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করে হুইপ জারি করেছিল কংগ্রেস। বিলের বিরোধিতা করে কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি বলেন, এই বিল ভারতের সাংবিধানিক কাঠামোর পরিপন্থী। এই বিল যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে নষ্ট করবে। বিলের বিরোধিতায় প্রথম থেকে সরব তৃণমূল।  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিলকে অসাংবিধানিক এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলে এসেছেন শুরু থেকেই।  এদিন বিলের কড়া সমালোচনা করেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।  X হ্যান্ডেলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, 'সংসদে যখন সংবিধান বিতর্ক এখনও চলছে, আজকে একটি সাংবিধানিক সংশোধনী বিল পেশ করার জন্য বিজেপির নির্লজ্জ প্রচেষ্টা গণতন্ত্রের উপর একটি নির্লজ্জ আক্রমণ থেকে কম নয়৷ ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন বিল জনগণের ভোট দেওয়ার মৌলিক অধিকার হরণ করতে চায়' 


কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, কংগ্রেস এক দেশ, এক ভোটের ধারণাকে সমর্থন করে না, তাঁরা বিশ্বাস করেন, এই বিল সরাসরি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর বিরোধী। সমাজবাদী পার্টির সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদবও এই বিলকে অসাংবিধানিক এবং রাজ্য সরকারগুলির কণ্ঠস্বরকে দমিয়ে রাখবে বলে মতপ্রকাশ  করেন। এনসিপি (এসপি) সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে, সংসদে সব দলের সঙ্গে এই বিল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার ওপর জোর দেন।  সিপিআই (এম) সাংসদ জন ব্রিটাস বলেন, 'ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন' বিল যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর বিরুদ্ধে এবং তাঁর দল এর তীব্র বিরোধিতা করে। 


 ‘এক দেশ, এক ভোট’ ব্যবস্থা চালু করা কতটা বাস্তবসম্মত, তা খতিয়ে দেখতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়। গত মার্চে সেই কমিটি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে ১৮ হাজার পাতার রিপোর্ট জমা দেয়। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে নতুন বিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দেওয়ার পর আজ লোকসভায় বিল পেশ করেন আইন মন্ত্রী।  মোদি সরকারের দাবি, ‘এক দেশ, এক ভোট’ ব্য়বস্থা কার্যকর হলে,  বিপুল খরচ কমানো সম্ভব হবে। বাঁচবে ভোটপ্রক্রিয়ার জন্য ব্যয় হওয়া প্রচুর সময়। যদিও এই প্রস্তাবকে মোদি সরকারের বুলডোজার রাজনীতি বলে সুর চড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  


আরও পড়ুন :


সংখ্যালঘু-মন্তব্যে কোণঠাসা ফিরহাদ! সত্যিই কী বলতে চেয়েছেন? ঘনিষ্ঠমহলে যা বলছেন তিনি...