বেঙ্গালুরু : ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের লড়াই যে আর একপেশে হবে না, তার ইঙ্গিত বোধ হয় বিরোধীদের বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে মিলে গেল। অন্তত তেমনই বলছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, বিরোধীদের নতুন জোটের নাম ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স। অর্থাৎ INDIA (Indian National Developmental Inclusive Alliance)। আর সেই নামের সূত্র ধরেই NDA-কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বিরোধী শিবিরের অন্যতম মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বললেন, 'INDIA-কে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে NDA ? বিজেপি তোমরা কি INDIA-কে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে?'


পটনায় বিরোধীদের প্রথম বৈঠক শেষে কোথাও একটা সংশয় ছিলই। বিরোধী দলগুলি কি এক জায়গায় আসতে পারবে ? কারণ, দিল্লির অর্ডিন্যান্স নিয়ে কংগ্রেস-আপের মধ্যে একটা টানাপোড়েন ছিলই। সেই বিরোধিতা কেটে যাওয়ায় দ্বিতীয় বৈঠকের আগে পরিবেশ অনেকটা মনোরম হয়ে যায়। বিরোধীদের একে অপরকে নিয়ে ক্ষোভের আঁচ কাটার ইঙ্গিত মেলে। 


এরাজ্যের রাজনীতিতেও পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগে সরব বাম-কংগ্রেস। কাজেই, ভোট সন্ত্রাসের আবহে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল একমঞ্চে এলে রাজ্য রাজনীতিতে কী তার আঁচ পড়বে সে নিয়েও নানা জল্পনা ছিলই। এর মধ্যেই গতকাল বেঙ্গালুরুতে তাজ ওয়েস্ট এন্ড হোটেলের ডিনার মিটিংয়ে পাশাপাশি বসেন সনিয় গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে তাঁরা একান্ত বৈঠকও সারেন। যা প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলে। যার জেরে গতকাল প্রাথমিক বৈঠক শুরু হতেও দেরি হয়ে যায়। এরপর আজ বৈঠকে বিরোধীরা সর্বাত্মক লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে বৃহত্তর লড়াইয়ের স্বার্থে রাজ্য-রাজনীতির বিভিন্ন সমীকরণ দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে বিরোধী দলগুলি।


মমতার বক্তব্যেও সেই ইতিবাচক দিকই ধরা পড়ল। বিরোধী বৈঠক শেষে আগাগোড়া বিজেপিকে একহাত নিয়ে তৃণমূলনেত্রী বললেন, "আজ খুব ভাল বৈঠক হয়েছে। গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ আলোচনা। আমার মনে হয়, আজ থেকে প্রকৃত চ্যালেঞ্জ শুরু হয়ে গেল। সরকার কেনা-বেচা-এই কাজ হয়ে গেছে সরকারের। তাই আজ আমরা সবাই মিলে একটা প্রকৃত চ্যালেঞ্জ নিয়েছি।"


NDA শিবিরকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, "তোমরা কি INDIA-কে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে ? বিজেপি তোমরা কি INDIA-কে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে ? আমরা আমাদের দেশকে ভালবাসি। আমরা দেশপ্রেমী মানুষ। আমরা যুব-ছাত্র-কৃষকদের জন্য রয়েছি। দলিতদের জন্য রয়েছি। দেশের জন্য রয়েছি। আমাদের সমস্ত অনুষ্ঠান, কর্মসূচি হবে INDIA-র ব্যানারে। যদি কেউ পারেন আমাদের ধরে দেখান। বিপর্যয় থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে। বিজেপি তো দেশ বেচার চেষ্টা করছে। লোকতন্ত্র কিনে ফেলার চেষ্টা করছে।"


তাঁর বক্তব্যে এদিনও উঠে আসে এজেন্সিকে অপব্যবহারের অভিযোগ। মমতা বলেন, "আজ কোনও স্বতন্ত্র এজেন্সিকে কাজ করতে দেওয়া হয় না। কেউ বিরোধীদের সমর্থন করলে, পরের দিন তার কাছে ইডি-সিবিআই চলে যায়। খালি ধমক দেয়, আমরা ৩৫৫ ধারা, ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করব। আমরা আজ রাজনৈতিকভাবে ৪২০ ধারা জারি করে দিয়েছি। যাতে ভারত জিতবে। বিজেপি হারবে।"