নয়া দিল্লি: রবিবার রাত থেকে বারংবার কেঁপে কেঁপে উঠেছে পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচি। রবিবার থেকে করাচিতে ২০ বার ভূকম্প হয়। পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তর (পিএমডি) অনুসারে, ৪৮ ঘণ্টায় ২০ বার ভূমিকম্প হয়েছে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ২.১ থেকে ৩.৬ পর্যন্ত।  একসঙ্গে এতবার ভূমিকম্পের কারণে আরও বিপজ্জনক ভূমিকম্পের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। মালির, লান্দি এবং কায়েদাবাদের মতো এলাকায় অনুভূত হয়েছে, যেগুলি পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের কাছাকাছি অবস্থিত, যা প্রশ্ন তুলেছে যে ইসলামাবাদ কি তার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করছে?                                      

সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, পাকিস্তানের মালি এলাকায় সর্বোচ্চ ৩.৬ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। মালি সংশোধনাগারের একটি দেওয়াল কম্পনের কারণে ভেঙে পড়ে। বিপর্যয়ের মাঝেই মালি সংশোধনাগার থেকে ২১৬ জন বন্দি পালিয়ে যায় বলে খবর। পাকিস্তানি এক ভূতাত্ত্বিক জানান, তিনি করাচির ভূমিকম্প হওয়ার অনেক আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এবং শুক্রবার ও শনিবার রাতে একটি বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনার কথাও বলেন।                              

আবহাওয়াবিদদের মতে, এই ভূমিকম্পগুলির মূল কারণ হল লান্ধি ফল্ট লাইনের সক্রিয়তা। দীর্ঘদিন ধরে এই ফল্ট লাইনে কোনও বড় ভূমিকম্প হয়নি এবং এখন ধীরে ধীরে সেখান থেকে শক্তি বেরিয়ে আসছে। এর ফলে ছোট ছোট ভূমিকম্প হচ্ছে। ১ জুন, রবিবার বিকেল ৫:৩৩ মিনিটে ৩.৬ মাত্রার প্রথম ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এরপর, ২ জুন, সোমবার দিন ও রাত জুড়ে একটানা কম্পন অনুভূত হয়। 

ওয়াকিবহাল মহলের মত, এই ভূমিকম্পগুলির প্রভাব সম্ভবত বেশি অনুভূত হচ্ছে কারণ এগুলি অগভীর এবং শহরের ভবনগুলির কাছাকাছি ঘনীভূত। যদিও এই ভূমিকম্পগুলির কারণে কোনও বড় ক্ষয়ক্ষতি বা আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ সতর্ক করেছে যে ভূমিকম্পের এই ধারাবাহিকতা আগামী সপ্তাহ ধরে চলতে পারে এবং এই সময়ে আরও ছোট ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভূতাত্ত্বিকভাবে পাকিস্তান ইউরেশিয়ান এবং ভারতীয় উভয় টেকটোনিক প্লেটকেই ওভারল্যাপ করে। বালুচিস্তান, ফেডারেলি শাসিত উপজাতীয় এলাকা, খাইবার পাখতুনখোয়া এবং গিলগিট-বালতিস্তান প্রদেশগুলি ইরানি মালভূমিতে ইউরেশিয়ান প্লেটের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। সেই কারণেই এমন ভূমিকম্প হতে পারে বলে মত আবহবিদদের।